রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিত করল চেম্বার আদালত

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় হাইকোর্ট থেকে পাওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক (Md. Rezaul Haque)। মামলাটির আসামি সাবেক ইসকন নেতা ও সনাতনী জাগরণ জোট (Sanatani Jagoron Jote) মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী (Chinmoy Krishna Das Brahmachari) এখনো কারাবন্দি রয়েছেন।

মঙ্গলবার (৬ মে) আপিল বিভাগ–এর চেম্বার আদালতে শুনানির সময় চিন্ময়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম কে রহমান এবং রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আরশাদুর রউফ। আদালত জামিন স্থগিত করে মামলাটি পরবর্তী শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও গ্রেপ্তার

গত বছরের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম–এ একটি সনাতনী সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন চিন্ময় দাস। এর পর ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।

২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই তিনি কারাবন্দি।

আদালত চত্বরে সংঘর্ষ ও আইনজীবী খুন

চিন্ময়ের জামিন না মঞ্জুর হওয়ার পর চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে তার অনুসারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এসময় আদালতের বাইরে সরকারি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

ঘটনার জেরে নিহত সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। এছাড়া ককটেল বিস্ফোরণ, পুলিশের কাজে বাধা এবং হামলার ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়।

নতুন গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ

মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দীনের আদালত চার মামলায় চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদেশ দেন। মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে পুলিশের কাজে বাধা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ।

আদালতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন চিন্ময় দাস। শুনানিতে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর রায়হানুল ওয়াজেদ বলেন, তদন্ত কর্মকর্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দিয়েছেন।

পূর্বের জামিন আবেদন ও স্থগিতাদেশ

চিন্ময় দাসের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট আদেশ দিলেও রাষ্ট্রপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিতের আবেদন করে। প্রথমে তা স্থগিত হয়ে পুনরায় শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়। সর্বশেষ চেম্বার বিচারপতির আদেশে জামিন স্থগিতই থেকে যায়।