টেকসই উন্নয়নে এডিবির সহযোগিতা চাইলেন অর্থ উপদেষ্টা: ডিজিটাল, জলবায়ু ও আঞ্চলিক খাতে গুরুত্ব

বাংলাদেশ-এর টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর কাছে চারটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে সহযোগিতা চেয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ইতালির মিলান-এ অনুষ্ঠিত এডিবির ৫৮তম বার্ষিক সভায় ভাষণকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

ডিজিটাল, জলবায়ু, আঞ্চলিক ও অর্থনৈতিক খাতে সহায়তা আহ্বান

সভায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বব্যাপী দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি, জলবায়ু অর্থায়ন, আঞ্চলিক সংযোগ এবং টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উন্নততর সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি চারটি খাতে এডিবির সহায়তা চেয়ে তুলে ধরেন:

  1. **ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি অবকাঠামো, ই-গভর্ন্যান্স এবং ডিজিটাল শিক্ষা সম্প্রসারণ
  2. জলবায়ু অর্থায়ন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু-বান্ধব কৃষি ও উপকূলীয় সুরক্ষায় ছাড়যুক্ত অর্থায়ন
  3. আঞ্চলিক সংযোগ: দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি
  4. টেকসই অর্থায়ন: ঋণ টেকসইতা বজায় রেখে উদ্ভাবনী তহবিল সহায়তা ও সহযোগিতা সম্প্রসারণ

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আজকের সংকটকে আগামীর সম্ভাবনায় রূপান্তরের জন্য সাহসী চিন্তাধারা, গভীর অংশীদারিত্ব ও সম্মিলিত সংকল্প প্রয়োজন।” তিনি এ বছরের এডিবি সম্মেলনের প্রতিপাদ্য “অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া, আগামীর প্রস্তুতি”–কে সময়োপযোগী বলে মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণ

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকীসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল এ সম্মেলনে অংশ নেয়। সভাপতিত্ব করেন এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাতো কান্দা

অর্থ উপদেষ্টা এ সময় নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বচ্ছতা ও টেকসই উন্নয়নের অগ্রযাত্রার কথা উল্লেখ করেন এবং কাঠামোগত সংস্কারে এডিবির ভূমিকা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক

যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করে বাংলাদেশ দল। বৈঠকে জানানো হয়, গত পাঁচ দশকে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে প্রায় ৩.১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে— যা দারিদ্র্য হ্রাস, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যয় হয়েছে।

যুক্তরাজ্য তাদের ২০২২ সালের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কৌশলের আলোকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু অর্থায়ন, এসএমই উন্নয়ন, ডিজিটাল প্রশাসন, শিক্ষা ও বাণিজ্য খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সবুজ বিনিয়োগ, কারিগরি প্রশিক্ষণ, নদী পুনরুদ্ধার, সাইবার নিরাপত্তা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা ও যৌথ গবেষণায় সহায়তার অনুরোধ জানানো হয়েছে।