কাটপিস ভিডিও ছড়িয়ে ধর্মবিদ্বেষী বানানোর অপপ্রচারের অভিযোগ উমামা ফাতেমার

উমামা ফাতেমা (Umama Fatema), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র, এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেছেন যে, ফেসবুকে কাটপিস ভিডিও ছড়িয়ে তাকে ধর্মবিদ্বেষী হিসেবে চিত্রিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে কিছু গোষ্ঠী। বুধবার (৭ মে) রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এই পোস্টে তিনি বলেন, “বিভিন্ন গোষ্ঠী আমাকে টার্গেট করে ধর্মবিদ্বেষী বানানোর প্রচারণা চালাচ্ছে।”

ধর্মবিদ্বেষের অভিযোগ ও ভিডিওর পেছনের সত্য

উমামা জানান, তার বিরুদ্ধে নতুন অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে যে তিনি নাকি সমাবেশে বক্তৃতা দেয়ার সময় আলেম-ওলামাদের গালি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ঘটনাটি ৯ মার্চের, কার্জন হল (Curzon Hall)-এর সামনে দোয়েল চত্বরে আমাদের আয়োজিত মানববন্ধনের ভিডিও। যেখানে আমরা বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ছাত্র-শিক্ষকরা অর্ণবের শাস্তি, শাহবাগ থানা (Shahbagh Police Station) ঘেরাও এবং আমাদের জুনিয়রের মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করার প্রতিবাদের কর্মসূচি পালন করি।”

তিনি দাবি করেন, প্রতিবাদের জেরে জুনিয়র ভিক্টিম মেয়েটির ব্যক্তিগত তথ্য—ফোন নম্বর, NID, বাসার ঠিকানা—অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। থানার ভিতর থেকেও তাকে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হয়। এসব বিষয়ে যখন তিনি রমনা জোনের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তখন জানানো হয় ঘেরাওকারীদের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (Ansarullah Bangla Team) এর সদস্যরা ছিল।

‘আলেম গালি’ বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া

উমামা ফাতেমা দাবি করেন, তার বক্তব্য বিকৃত করে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী তাকে ‘ধর্মবিদ্বেষী’ এবং ‘পুরুষবিদ্বেষী’ বানানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “যারা এই নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যদের আলেম-ওলামার মর্যাদার সঙ্গে তুলনা করছে, তারাই প্রকৃতপক্ষে ইসলাম ও আলেমদের অবমাননা করছে।”

তিনি বলেন, “অর্ণব নামক হেনস্থাকারীকে যেভাবে আদালতের সামনে মাথায় পাগড়ি, গলায় গাদাফুলের মালা ও হাতে কোরআন শরীফ দিয়ে বরণ করা হয়েছে, সেটিই প্রকৃত কোরআন অবমাননা।”

মিডিয়া ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

উমামা আরও অভিযোগ করেন, Jamuna Television একটি ভিডিওর ক্যাপশনে বিভ্রান্তিকরভাবে উল্লেখ করেছে যে তিনি বলেছেন, ‘হেফাজতে ইসলাম (Hefazat-e-Islam) নারী জাতির বিরুদ্ধে’, অথচ ভিডিওতে তিনি ভিন্ন কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, “এই ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ক্যাপশন জনপরিসরে ভুল বার্তা ছড়ায়, কোনো গোষ্ঠীকে শত্রু বানানো আমার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নয়।”

হেফাজতের দুঃখপ্রকাশ ও রাজনৈতিক বার্তা

উমামা ফাতেমা হেফাজতে ইসলামের দুঃখপ্রকাশকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “হেফাজতের মহাসমাবেশ থেকে নারীদের গালি দেওয়ার ঘটনায় তারা দুঃখপ্রকাশ করেছে, এটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।”

তিনি আরও বলেন, “শাপলা-শাহবাগ বাইনারির ফাঁদে পড়ে দেশটাকে বিভাজিত না করে মতানৈক্যগুলো টেবিলে বসে সমাধানের আহ্বান জানাই। হেফাজতের ৫ আগস্ট-পরবর্তী নারীর অধিকার গ্রহণ এবং আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের মতো দাবিগুলো রাজনৈতিক ঐক্যের সূচনা ঘটাতে পারে।”