কেরানীগঞ্জ (Keraniganj) এলাকায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (Dhaka Central Jail) প্রাঙ্গণে খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)-র জন্য বানানো একটি বিশেষ কারাগার নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় ব্যবহার হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ (Awami League)-এর গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের জন্য। ১৫ মে থেকে এই কারাগারে বন্দি স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
২০১৮ সালে কারাগারটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তখন খালেদা জিয়াকে সেখানে স্থানান্তরের প্রস্তুতিও চলছিল। কিন্তু করোনা মহামারির সময় তিনি ৬ মাসের নির্বাহী মুক্তি পান এবং পরে তার মুক্তির মেয়াদ বারবার বাড়ানো হয়। ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যায় এবং তিনি আর জেলে ফিরে যাননি।
এদিকে বিশেষ ওই কারাগারটি এখন ব্যবহার করা হবে আওয়ামী লীগের গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও ভিআইপিদের জন্য। কারা মহাপরিদর্শকের দপ্তরের জান্নাতুল ফরহাদ জানান, জেল সুপার মোহাম্মদ তাইফুদ্দিন, জেলার শাখাওয়াত হোসেনসহ প্রয়োজনীয় কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন। কারাগারটিতে থাকবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, থাকবে সিসিটিভি, জ্যামার, এবং ভিআইপি বন্দিদের জন্য বিশেষ নজরদারি। তাদের সেবায় সাধারণ বন্দিদেরও নিয়োগ দেওয়া হবে।
দৈনিক যুগান্তরের বরাতে জানা গেছে, নতুন এই কারাগারে বন্দি করা হবে সরকার পতনের পর গ্রেপ্তার হওয়া মোট ১৪৬ জন প্রভাবশালী নেতাকে। তাদের মধ্যে আছেন:
- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান (Salman F Rahman)
- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক (Anisul Huq)
- শাজাহান খান (Shajahan Khan), রাশেদ খান মেনন (Rashed Khan Menon), হাসানুল হক ইনু (Hasanul Haq Inu), সাধন চন্দ্র মজুমদার (Sadhan Chandra Majumder), জুনায়েদ আহমেদ পলক (Zunaid Ahmed Palak), আরিফ খান জয় (Arif Khan Joy)
- প্রাক্তন আইজিপি, এসপি, সচিব, মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা—যেমন: সাদেক খান, মো. শহিদুল হক, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, মো. সোহাইল, আতিকুল ইসলাম, শাহ কামাল
- সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ডা. এনামুর রহমান, দীপু মনি, চিফ হুইপ আসম ফিরোজ, সাবেক হুইপ মাহবুব আরা গিনি, তানভীর ইমাম, আব্দুর রহমান বদি, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ বহু পরিচিত মুখ।
এছাড়াও সাবেক বিচারপতি, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা, সেনা কর্মকর্তা, ডিএমপি কমিশনার, হুইপ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও তালিকায় রয়েছেন।
এই কারাগারটি এখন বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতীক হয়ে উঠছে—যেখানে আগে বানানো হয়েছিল একজন বিরোধী নেত্রীর জন্য, এখন ব্যবহৃত হবে সাবেক ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের জন্য।