জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party)র যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার (Sarwar Tushar) সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শোতে মন্তব্য করেছেন, শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)র লক্ষ্য ছিল বেগম খালেদা জিয়া (Begum Khaleda Zia)কে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে ফেলা এবং ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা। তবে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে বলেই তিনি মনে করেন।
গণঅভ্যুত্থান ও “ডিভাইন জাস্টিস”
সারোয়ার তুষার বলেন, “ডিভাইন জাস্টিস হচ্ছে এই গণঅভ্যুত্থান, যা উল্টোটা ঘটিয়েছে—শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে বিদায় দিয়েছে এবং বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের মাটিতে ফিরিয়ে এনেছে।” তিনি বলেন, এখন বেগম জিয়া শুধু রাজনীতিক নন, তিনি রাজনীতির ঊর্ধ্বে একটি ঐতিহাসিক চরিত্র।
বেগম জিয়ার ত্যাগ ও রাজনীতিতে প্রতিক্রিয়া
তুষার বলেন, “বেগম জিয়া যে প্রতিকূল অবস্থায় থেকেও টিকে আছেন, সেটাই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক। তাঁর উপস্থিতি কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করেছে এবং বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি পুনরুজ্জীবিত করবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “বেগম জিয়ার দেশে ফেরা ঐতিহাসিক, কারণ তাঁর মতো একজন অভিজ্ঞ রাজনৈতিক নেত্রীর উপস্থিতি জাতীয় রাজনীতিতে ভারসাম্য তৈরি করবে।”
অতীতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
সারোয়ার তুষার ১৯৮৬ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, “আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণকে ‘জাতীয় বেইমানি’ বললেও পরবর্তীতে নিজেরাই অংশ নিয়েছে। কিন্তু বেগম জিয়া কখনও এ ধরনের রাজনৈতিক সুবিধাবাদে জড়াননি।”
২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেন পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নে বেগম জিয়া শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছেন, যদিও তখন চাইলেই তিনি শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি রাজনীতির ভারসাম্য বজায় রাখার প্রজ্ঞা দেখিয়েছেন।”
শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পরিণতি ও বেগম জিয়ার ফিরে আসা
তুষার মনে করেন, “শেখ হাসিনার দীর্ঘদিনের স্বৈরাচারী শাসনের পরিণতিই হচ্ছে আজকের তার রাজনৈতিক বিদায়। আর বেগম খালেদা জিয়ার ফিরে আসাটা তার জীবনের একটি বড় অর্জন এবং জাতীয় রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।”
তিনি বলেন, “যদিও বার্ধক্যের কারণে তিনি কতটা সক্রিয় হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে, কিন্তু তার এই ফিরে আসা আমাদের জন্য আনন্দের, গর্বের এবং একটি নতুন রাজনৈতিক প্রেরণার উৎস।”