রাতভর অভিযান শেষে নারায়ণগঞ্জে গ্রেফতার ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী

রাতভর নাটকীয় অভিযানের পর অবশেষে নারায়ণগঞ্জ (Narayanganj) শহরের দেওভোগ এলাকার নিজ বাসভবন ‘চুনকা কুটির’ থেকে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী (Dr. Selina Hayat Ivy)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (Narayanganj City Corporation) এর সাবেক মেয়র এবং আওয়ামী লীগ (Awami League) জেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি ছিলেন।

এলাকাবাসীর বাধার মুখে রাতেই গ্রেফতার সম্ভব হয়নি

বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা (Narayanganj Sadar Police Station) পুলিশের একটি দল ডা. আইভীর বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু তার গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাজার হাজার এলাকাবাসী চুনকা কুটিরের সামনে ভিড় করেন এবং বাড়ির ফটকে বাঁশ, ঠেলাগাড়ি ফেলে পথ অবরোধ করে তাকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। মসজিদের মাইক থেকে এলাকাবাসীকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানানো হয়।

জেলা পুলিশের আরেকটি টিম এসে প্রবেশের চেষ্টা করলে স্থানীয়দের বাধার সম্মুখীন হয়। পরে পুলিশের একটি তিন সদস্যের দল বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে, আইভী আপ্যায়ন করেন চা-বিস্কুট দিয়ে। তবে রাতে গ্রেফতার নিয়ে আপত্তি জানানোয় তাকে তখনই আটক করা হয়নি।

ফজরের নামাজের পর গ্রেফতার, পুলিশের সঙ্গে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান

শুক্রবার (৯ মে) ভোরে ফজরের নামাজ শেষে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় গণমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, “আমি আলী আহাম্মদ চুনকার সন্তান। সাম্যের রাজনীতি করেছি, কারও সঙ্গে প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ করিনি। ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ বলার অপরাধে যদি বিচার হয়, আমি প্রস্তুত।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সরকার বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে, তাহলে আজ আমাকে কেন এভাবে গ্রেফতার করা হলো? আমি তো পালাইনি। এভাবে গ্রেফতার কেন?” এরপর তিনি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে পুলিশের সঙ্গে রওনা হন।

হত্যা মামলাসহ ৫ মামলায় গ্রেফতার দেখানো

সিদ্ধিরগঞ্জ (Siddhirganj) ও ফতুল্লা (Fatullah) থানায় ডা. আইভীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এসব মামলার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং জেলা গোয়েন্দা কার্যালয়ে (District Detective Branch Office) নেওয়া হয়েছে।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসিনুজ্জামান (Additional Superintendent of Police Md. Hasinuzzaman)।