Thursday , April 25 2024
Home / economy / বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে নতুন এক দুঃসংবাদ দিলো আইএমএফ

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে নতুন এক দুঃসংবাদ দিলো আইএমএফ

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে এখনো কাটেনি ধোঁয়াশা। বিশেষ করে দেশের অর্থনীতির খরা না কাটার কারনে এখনো রয়েছে বেশ বিপদের অভ্যাস। এ দিকে এবার বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে নতুন একটি দুঃসংবাদ দিলো আইএমএফ। বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি তিনটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এগুলো হলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ক্রমাগত পতন, ডলারের বিপরীতে টাকার নিম্নমুখী প্রবণতা এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ব্যবধান। এসব কারণে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়ছে। যা অর্থনৈতিক ভারসাম্যের ব্যাপক ক্ষতি করছে।

এ কারণে সরকারের সামগ্রিক ব্যয় বাড়ছে। অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে সরকারের ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয় বৃদ্ধি, রাজস্ব বৃদ্ধি এবং ভর্তুকি হ্রাস করেই এই চাপ কমানো যেতে পারে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পর্যবেক্ষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আইএমএফের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) আন্তোয়েনেট এম সায়েহ বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের ঋণ আলোচনা চূড়ান্ত করতে ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসেন। তিনি ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা সফর করেন। এ সময় বাংলাদেশের অর্থনীতির সাধারণ অবস্থা তুলে ধরে আইএমএফ সরকারকে একটি প্রতিবেদন দেয়।

ওই প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এটি ঋণ পাওয়ার জন্য আইএমএফের কর্মপরিকল্পনার রূপরেখাও দেয়। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এগুলো বাস্তবায়নে কাজ করছে এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি পর্যালোচনা করছে।

এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির বেশ কিছু ইতিবাচক দিক তুলে ধরা হয়েছে। এদিকে বৈদেশিক ঋণের পরিস্থিতি এখনও স্বস্তিদায়ক। তবে স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমানোর ওপর জোর দিয়েছে সংস্থাটি। তারা বলেন, এ ধরনের ঋণ ঝুঁকি বাড়াবে।

অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলায় আইএমএফ থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সভায় ঋণ প্রস্তাবটি অনুমোদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এমনটা হয়, তবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ঋণের প্রথম কিস্তি বিতরণ করা হতে পারে।

আইএমএফের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে এবং আমদানি ব্যয়ও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমেছে। বৈশ্বিক অস্থিরতা বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহ হ্রাস করেছে। এতে আমদানি ব্যয়ের প্রবল চাপে রিজার্ভ কমছে। রিজার্ভ ক্রমাগত হ্রাস অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ। রিজার্ভ কমে গেলে বাজারে ডলারের চাপও বাড়বে। এতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমবে। যা এশিয়ার প্রায় সব দেশেই হচ্ছে। টাকার মান কমলে সব খাতে সরকারি ব্যয় বাড়বে। একই সঙ্গে আমদানি ব্যয় ও পণ্যের দাম বাড়বে। যা মূল্যস্ফীতির হারকে আরও বাড়িয়ে দেবে। যা পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

আমদানি ব্যয়সহ অন্যান্য খাতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় বাড়ছে বলে আয় বাড়ছে না। এতে সার্বিক বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি বাড়ছে। এই ঘাটতি কমাতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতার কারণে অর্থনীতিতে সৃষ্ট সংকট উত্তরণে সরকারকে উভয় দিক থেকে রাজস্ব বাড়াতে হবে। বৈদেশিক খাতে ভারসাম্য বজায় রাখতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়াতে হবে। এ জন্য প্রবাসীদের রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং ব্যাংকিং মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠাতে উৎসাহিত করতে হবে। অভ্যন্তরীণ ব্যয় বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য রাজস্ব বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় খাতে ভর্তুকি কমাতে হবে। তাহলে উভয় ক্ষেত্রেই ভারসাম্য বজায় রেখে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠু রাখা সম্ভব হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সংকট মোকাবেলায় মজুদের ওপর চাপ কমাতে সব ধরনের বিলাসবহুল পণ্যের আমদানি কমানো হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিও কমেছে। মূল্যস্ফীতির ক্রমাগত বৃদ্ধি জনগণের আয় হ্রাস করেছে এবং সরকারী সংস্থার ব্যয়ের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের জন্য তেল-গ্যাস আমদানি কমানো হয়েছে। বিদ্যুৎসহ সব ধরনের জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে হ্রাস করেছে। একই সময়ে মুদ্রানীতির কঠোরতা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরও কমিয়ে দেয়। চাহিদা কমলে ক্রয় ক্ষমতাও কমে। এতে মূল্যস্ফীতির হার নিম্নমুখী হলেও সরকারের অতিরিক্ত ঋণ গ্রহণ ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। তবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গত বছরের চেয়ে বাড়বে। আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্ভাব্য গতিতে ফিরবে বলে প্রতিবেদনে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।

বলা হয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পণ্য সরবরাহে নতুন করে সংকটের আশঙ্কা রয়েছে। সামগ্রিকভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক (এফআরবি) যেভাবে তাদের নীতিগত সুদের হার বাড়াচ্ছে তাতে বাংলাদেশেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। কারণ এতে ডলারের দাম বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে সংকট।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে ঋণ পাচ্ছে। এতে সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনার চাপ কিছুটা স্বস্তি পাবে। এর সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারকে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়াতে হবে। এছাড়া ভর্তুকি কমাতে হবে। তাহলে সরকারের লাভ হবে। এসব উদ্যোগের ফলে বৈশ্বিক মন্দার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে গত অর্থবছরের ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ ৯.৫১ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হয়েছে। তারপর থেকে, আমদানি লাগাম টেনে ধরেছে। এতে আমদানি কমেছে। গত ডিসেম্বরে আমদানি ব্যয় কমে দাঁড়িয়েছে ৭ বিলিয়ন ডলারে। আমদানি বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স না বাড়িয়ে রিজার্ভ থেকে ডলার দিয়ে আমদানি ব্যয় মেটাতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী প্রবণতায় রয়েছে। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ $৪৮.০৬ বিলিয়ন-এ শীর্ষে ছিল। তারপর থেকে রিজার্ভের নিম্নগামী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে, যা এখনও চলছে। সেই বছরের সেপ্টেম্বরে, রিজার্ভ ৪৬.২ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। অক্টোবরে এটি সামান্য বেড়ে $৪৬৪.৬ বিলিয়ন হয়েছে। নভেম্বরে তা কমে ৪৪.৮৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ডিসেম্বরে এটি কিছুটা বেড়ে ৪৬.১৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে, এটি ৪৪.৯৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। ফেব্রুয়ারিতে তা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৫৯৫ মিলিয়ন ডলারে। মার্চে তা আবার কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৪১৫ মিলিয়ন ডলারে। এপ্রিলে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৪০২ মিলিয়ন ডলারে। মে মাসে তা কমে ৪ হাজার ২২০ মিলিয়ন ডলার এবং জুনে ৪ হাজার ১৮৩ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। জুলাইয়ে ৩ হাজার ৯৬০ মিলিয়ন ডলার, আগস্টে ৩ হাজার ৯০৬ মিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে ৩ হাজার ৬৪৮ মিলিয়ন ডলার, অক্টোবরে ৩ হাজার ৫৮১ মিলিয়ন ডলার, ডিসেম্বরে ৩ হাজার ৩৭৭ মিলিয়ন ডলার। গত ২৫ জানুয়ারি তা আরও কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ২২০ মিলিয়ন ডলারে।

রিজার্ভের সর্বশেষ বৃদ্ধি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তারপর থেকে এটি কোনো মাসে বাড়েনি। নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, আইএমএফ এর কাছে এর আগে বাংলাদেশ চেয়েছিলো মোটা অংকের ঋণ। সেই ঋণ অবশ্য এখনো পারমিট করেনি সংস্থাটি। এ ছাড়াও দুঃসংবাদ দেয়া আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির হার কমতে শুরু করলেও এর প্রভাব এখনও অর্থনীতিতে পড়তে শুরু করেনি। বরং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিছু সূচকে নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি করেছে। তাদের মতে, ব্যাংক খেলাপি বৃদ্ধি ও সঞ্চয় হ্রাসের প্রবণতা ব্যাংকিং খাতকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

About Rasel Khalifa

Check Also

৪ বছরে কোটিপতি হিরো আলম, জানালেন আয়ের উৎস

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে অনেকটা ভাগ্য বদলে জায় বগুড়া ডিসলাইনের (কেবল অপারেটর) ব্যবসায়ী এক যুবকের। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

uzaki-chan wa asobitai hentai hentaicity.org hentai dickgirl سكس مصرى نار جديد freetube18x.com الاباحية الحرة start up ph october 4 2022 teleseryena.com david licauco maria clara download porn videos indian creampieporntrends.com myhotmasala tamil office sex videos pimpmpegs.info home sexy video pirnstar hugevids.mobi x videos hd صور حب سكسي porndot.info سكس فلاحات مصريات tamilaunt pornvideox.mobi indian hindi xnxx heroines sex pornmovstube.net hiroen sex @monashiman javmobile.mobi saegusa chitose massage beeg pakistanixxxx.com sex videos x videos xvideo favroite list indian indianxtubes.com www xnxxx sex video com rape sex video in india makato.mobi desi.sex sexy picture dikhaiye video tubefury.mobi anty nude video please be careful with my heart episodes teleseryeepisodes.com 2good 2 be true