নারায়ণগঞ্জ (Narayanganj) সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ (Awami League) নেত্রী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী (Dr. Selina Hayat Ivy)কে শুক্রবার (৯ মে) সকালে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী (Tanvir Muhammad Taqi)’র বাবা ও বিশিষ্ট নাগরিক রফিউর রাব্বি (Rafiqul Rabbi)।
‘নরক বানানো শামীম ওসমান পালিয়ে, আইভী গ্রেপ্তার’—রাব্বি
শুক্রবার সকালে ফেসবুক (Facebook) পোস্টে রাব্বি লেখেন, “আইভীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অথচ নারায়ণগঞ্জকে নরক বানানো শামীম ওসমান (Shamim Osman) পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সরকার এবং বিএনপি নেতারা তাকে সাহায্য করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “যার সঙ্গে সাপ-নেউলের সম্পর্ক, সেই শামীম ওসমানের সঙ্গে আইভী কীভাবে খুন করতে পারে? সরকার বলছে তদন্ত ছাড়া গ্রেপ্তার নয়, অথচ এখানে রাতে ঘিরে রেখে সকালে গ্রেপ্তার করা হলো।”
‘সরকার অনেক কিছু সামাল দিতে পারছে না’—রাব্বির অভিযোগ
রাব্বি অভিযোগ করেন, সরকারের কিছু কর্মকর্তার ‘অতি উৎসাহে’ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। “৫ আগস্টের পরও আইভী বাসায় ছিলেন, পালিয়ে যাননি। তাহলে রাতভর নাটক কেন?”—এই প্রশ্নও তোলেন তিনি।
আইভীর প্রশংসা করে রাব্বি লেখেন, “তিনি কখনও দলীয় সংকীর্ণতা দেখাননি। বিএনপি-জামায়াতসহ সব দলের লোকদের সহযোগিতা করেছেন। এজন্যই শেখ হাসিনার সুনজরে যেতে পারেননি।”
তিনি আরও দাবি করেন, “শামীম ওসমান দুদকে তিনবার অভিযোগ করেও কিছু প্রমাণ করতে পারেননি। ৫ আগস্টের পর নতুন তদন্ত হলেও সেখানেও কিছু মেলেনি।”
আদালতের আদেশে কারাগারে
শুক্রবার সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈনউদ্দিন কাদির (Md. Moinuddin Kadir) এর আদালত সিদ্ধিরগঞ্জ (Siddhirganj) থানার মিনারুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আইভীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান (Md. Kaiyum Khan)।
পুলিশের গাড়িবহরে হামলা, আহত ৫
আইভীকে গ্রেপ্তার করে নেওয়ার সময় সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডের কালির বাজার মোড়ে তার বহনকারী গাড়ির ওপর হামলা চালানো হয়। ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপে র্যাব ও পুলিশের দুই সদস্যসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন।
এলাকাবাসীর বাধা, মধ্যরাতের উত্তেজনা
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার (Narayanganj Sadar Police Station) পুলিশ আইভীর বাড়ি চুনকা কুটির (Chunka Kutir) ঘিরে ফেলে। এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে তার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন। রাত ৩টার দিকে পুলিশের একটি দল বাড়িতে প্রবেশ করে, তবে আইভী জানান তিনি রাতে গ্রেপ্তার হতে চান না, বরং দিনের আলোতে আইনগত প্রক্রিয়ায় আত্মসমর্পণ করতে চান।