শাহবাগে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি: এবার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন

২০১৩ সালের যুদ্ধাপরাধবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু শাহবাগ (Shahbagh) এখন পরিণত হয়েছে নতুন এক রাজনৈতিক আন্দোলনের মঞ্চে। একসময় যেখানে জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল ছিল জনতা, ২০২৫ সালে এসে সেই একই স্থানে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগান তুলেছে বিভিন্ন দল ও সাধারণ মানুষ।

আন্দোলনের পটভূমি পরিবর্তন

২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং জামায়াত নিষিদ্ধের দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চ (Ganojagoron Mancha) শাহবাগে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনে স্লোগান, কবিতা, গান ও নাটকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হতো। কাদের মোল্লা (Quader Molla)-এর বিতর্কিত রায়কে ঘিরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।

নতুন যুগে নতুন দাবি

বর্তমানে ‘জুলাই বিপ্লব’ (July Revolution)-এর প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ জামায়াত-শিবির ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে এনসিপি (NCP)-র নেতাকর্মীরা প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’র সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। শুক্রবার সকালে সেখান থেকে মিছিল করে শাহবাগে এসে বসে পড়েন হাজারো মানুষ।

‘শাহবাগ ব্লকেড’ ও সমর্থন

বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় ‘শাহবাগ ব্লকেড’। এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ (Hasnat Abdullah) কর্মসূচির আহ্বান জানালেও, এতে ব্যাপকভাবে অংশ নেয় জামায়াত-শিবির। বিএনপি (BNP) ছাড়া প্রায় সব রাজনৈতিক দল এ আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে।

তিন দফা দাবি

রাত ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত জানান, আন্দোলনকারীরা তিনটি মূল দাবি তুলে ধরেছেন—
1. আওয়ামী লীগ ও তাদের সকল সহযোগী সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা;
2. আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে দলগত বিচারের বিধান অন্তর্ভুক্তি;
3. জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র জারি।

তিনি বলেন, “যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হচ্ছে, আমরা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।”

ফেসবুক বার্তা ও নির্দেশনা

শুক্রবার মধ্যরাতে নিজের ফেসবুক (Facebook) পেজে দেওয়া বার্তায় হাসনাত আহ্বান জানান, শাহবাগ ছাড়া দেশের অন্য কোথাও ব্লকেড না দিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত ও সমাবেশ করতে। জেলা পর্যায়ে আন্দোলন চালাতে বললেও তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “ব্লকেড না, ব্লকেড খুলে দিন।”