দেশে এখন বিনিয়োগ নয়, চলছে সার্কাস: মন্তব্য আমীর খসরুর

দেশে এখন প্রকৃত বিনিয়োগ নয়, বরং ‘বিনিয়োগের সার্কাস’ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি (BNP)-র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (Amir Khasru Mahmud Chowdhury)।

শুক্রবার (৯ মে) চট্টগ্রাম (Chattogram)-এর কাজীর দেউড়ির একটি কনভেনশন সেন্টারে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের আয়োজিত ‘তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ’ শীর্ষক চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিভাগীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিনিয়োগ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জনগণের সরকার

আমীর খসরু বলেন, “যারা বিনিয়োগ বোঝে, তারা জানে বর্তমান পরিবেশে বিনিয়োগ সম্ভব নয়। বিনিয়োগ তখনই হবে, যখন জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠিত হবে এবং সেই সরকারকে দেখে বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্ত নেবে।”

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তখনই আসে, যখন সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় এবং জবাবদিহির আওতায় থাকে। দেশের বর্তমান সরকার সেই মানদণ্ড পূরণ করে না বলেই বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাচ্ছেন না।

‘বিনিয়োগের সার্কাস’ মন্তব্য এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির শিক্ষা

বক্তব্যে আমীর খসরু বলেন, “আমরা এখন বিনিয়োগের সার্কাস দেখছি।” পাশাপাশি তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন এসেছে এবং এই সেমিনার থেকে অংশগ্রহণকারীরা তিনটি বড় শিক্ষা নিয়ে যাচ্ছেন:
1. সম্বোধনের রীতি থেকে মুক্তি;
2. বিএনপি নয় এমন মানুষদের ফোরামে যুক্ত হওয়ার সুযোগ;
3. নেতারা সামনে বসেও বক্তৃতা না করে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা।

তিনি দাবি করেন, “শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) পালিয়ে যাওয়ার পরে দেশের জনগণের মনোজগতে বিশাল পরিবর্তন এসেছে, যা বিএনপি অনুধাবন করতে পেরেছে। যারা বুঝতে পারছে না, তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নেই।”

কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ প্রসঙ্গে বক্তব্য

বিনিয়োগ ছাড়া আত্মকর্মসংস্থান কিংবা চাকরির সুযোগ সৃষ্টি সম্ভব নয় উল্লেখ করে খসরু বলেন, “বিএনপির রাজনীতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman)-এর পথ অনুসরণ করে মুক্ত বাজার অর্থনীতি ও গণতন্ত্রের ওপর ভিত্তি করে এগিয়েছে।”

অন্যান্য বক্তাদের উপস্থিতি

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর উপদেষ্টা মাহদী আমিন, জনপ্রিয় টিভি ব্যক্তিত্ব ডা. জাহেদ উর রহমান, ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, এবং একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন:
– অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন (ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটি)
– অধ্যাপক আকতার হোসেন খান (স্টেট ইউনিভার্সিটি)
– ড. নসরুল কদির (প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি)
– ড. ওমর ফারুক ইউছুপ (চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়)
– অধ্যাপক জামাল উদ্দিন (কর্নেল ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র)
– অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
– অধ্যাপক ড. নাহরিন আই খান (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়)
ফাহিম আহমেদ (Fahim Ahmed), পাঠাও (Pathao)-এর সিইও

অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওরাকলের সি. ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার মুনতাসীর মুনির-সহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।