গতকাল রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত প্রায় ১১ টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজধানী ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান আলোচিত রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
নাজমুল হুদা ১৯৪৩ সালের ৬ জানুয়ারি ঢাকার দোহায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন আইনজীবী এবং একজন রাজনীতিবিদ উভয়ই ছিলেন। দেশের রাজনীতিতে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়েছেন তিনি। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে জাগো দল গঠন করেন। সে সময় নাজমুল হুদা দলে যোগ দেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ১৯৭৮ সালে গঠিত হয়। তিনি দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
নাজমুল হুদা ছিলেন বিএনপির সর্বকনিষ্ঠ স্থায়ী কমিটির সদস্য। বেগম জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ১৯৯১ সালে সরকার গঠন করে। তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত নাজমুল হুদা বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন। ১/১১ পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে তিনটি দুর্নীতির মামলা ছিল। ২০১০ সালের ২১ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেন।
সে সময় দলের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন নাজমুল হুদা। তবে বহিষ্কৃত হলেও তিনি দলীয় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলস্বরূপ, ৫ এপ্রিল, ২০১১-এ তার সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। নাজমুল হুদা ৬ জুন, ২০১২ তারিখে বিএনপি থেকে স্থায়ীভাবে পদত্যাগ করেন। পরে ১০ আগস্ট, তিনি আবুল কালাম আজাদের সাথে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (BNF) নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
কিন্তু কয়েক মাস পর নাজমুল হুদাকে বিএনএফ থেকে বহিষ্কার করেন আবুল কালাম। তিনি ২০১৪ সালে এমপি হন। নাজমুল হুদা ৭ মে, ২০১৪-এ বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (বিএনএ) গঠন করেন। তিনি ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস পার্টি (বিএমপি) নামে একটি দল গঠন করেন। ২০ নভেম্বর, ২০১৫-এ নাজমুল হুদা আরেকটি দল গঠন করেন। নতুন দল তৃণমূল বিএনপি।সম্প্রতি দলটি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ইসির নিবন্ধন পায়।
এদিকে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে পরিবার-স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানান নেতাকর্মীরা।