প্রেমের টানে বাংলাদেশে ছুটে আসা যেন বর্তমান সময়ে একটি নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।প্রায়শই শোনা যায় বাংলাদেশে প্রেমের টানে ছুটে আসছে অনেক বিদেশী তরুণ তরুণী। আর সেই ধরনের আরো একটি ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে সম্প্রতি দেশের গোপালগঞ্জ জেলাতে। কয়েকদিন আগেই জানা যায় প্রেমের টানে জার্মানি থেকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে এসেছেন এক তরুণী। এরপর রোববার গোপালগঞ্জের একটি আদালতে হলফনামার মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়।
জার্মান মেয়েটির নাম জেনিফার স্ট্রস। তিনি জার্মানির বিলেফেল্ড রাজ্যের জোসেফ স্ট্রস এবং ইসাবেলা স্ট্রসের একমাত্র কন্যা। প্রেমিক চয়ন ইসলাম বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুড়ো গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম ও ঝর্ণা বেগমের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাবা প্রবাসী হওয়ার কারণে ছয় বছর আগে চয়ন ইতালি যান। কিছুদিন পর তিনি জার্মানি চলে যান। পাঁচ বছর আগে, যখন তিনি একটি ভাষা কোর্সে ভর্তি হন, সেখানে জেনিফারের সাথে তার পরিচয় হয়। পরে তা প্রেমে রূপ নেয়।
চয়ন চার বছর পর ২০২২ সালের ১০ মার্চ বাংলাদেশে চলে আসেন। কিন্তু জেনিফার ও চয়নের প্রেমে কোনো ফাটল ছিল না। প্রেমের টানে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে চয়নের কাছে এসেছেন জেনিফার।
১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে জেনিফার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। সেখান থেকে চয়ন ও তার স্বজনরা জেনিফারকে গোপালগঞ্জে নিয়ে আসেন। পরে রোববার গোপালগঞ্জের আদালতে হলফনামার মাধ্যমে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
চয়নের পরিবার জানিয়েছে, বাবা জোসেফ ট্রায়াস মেয়ে জেনিফারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। তারা আরও জানান, জেনিফারের বাবা কয়েকদিন পর বাংলাদেশে আসবেন এবং মেয়ের বিয়েকে জমকালো আয়োজনে পরিণত করবেন।
চয়ন ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেনিফারকে পেয়ে আমি খুবই ভাগ্যবান। তিনি আমার জন্য বাংলাদেশে এত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন। সবাই আমাদের বিবাহের জন্য দোআ করবেন। আমরা যেন আমাদের বাকি জীবন একসাথে কাটাই এবং সুখী হই।’
জেনিফার বলেন, “আমি বাংলাদেশকে ভালোবেসে এসেছি। চয়নকে বিয়ে করে আমি খুব খুশি। এখানকার পরিবেশ, আতিথেয়তা এবং সবার ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। পরিবারের সবাই আমাকে আপন করে নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ দিকে বাংলাদেশে এই ঘটনা নতুন কিছু নয়। এর আগেও এমন ধরনের অনেক ঘটনার জন্ম হয়েছে এই দেশে।এখন পর্যন্ত সেই সব বিয়ে নিয়ে শোনা যায়নি নেতিবাচক কিছুই। বলতে গেলে প্রেমের টানে বাংলাদেশে যারা ছুটে এসেছেন তারা সকলেই বাংলাদেশকে ভালোবেসে রয়ে গেছেন এই দেশের মাটিতে।