Saturday , April 1 2023
Breaking News
Home / opinion / প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তন হবে না,ক্ষমতা পাকাপোক্ত করলে পাওয়া যাবে ১৪ দফা সুবিধা:অবসরপ্রাপ্ত মেজর

প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তন হবে না,ক্ষমতা পাকাপোক্ত করলে পাওয়া যাবে ১৪ দফা সুবিধা:অবসরপ্রাপ্ত মেজর

বাংলাদেশের রাজনীতির এখন গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যায় চলছে। কারন দেশের রাজনীতি কোন দিকে আগাচ্ছে তা নিয়ে দাঁড়িয়েছে নানা ধরনের সংশয়। বিশেষ করে সরকারের নানা ধরনের পদক্ষেপ আর বিরোধী দলের আন্দোলন এ নিয়ে চলছে একটি পাল্টাপাল্টি অবস্থান। সম্প্রতি এসব নিয়েই একটি ফেইসবুক লেখনী লিখেছেন বাংলাদেশের সাবেক মেজর ও সাবেক বিএনপি নেতা আখতারুজ্জামান। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:

সম্মিলিত বিরোধী দলের কাছে সময় আছে আগামী অক্টোবর পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৮ মাস। এই ৮ মাসের মধ্যে যদি তাদের দাবি মানতে সরকারকে বাধ্য করতে না পারে তাহলে আম ও ছালা দুটোই তাদেরকে হারাতে হবে।

তখন যদি সময়ের চাপে নির্বাচনে যাওয়ার স্বিদ্ধান্ত বিরোধিরা নেয় তাহলে তাদের নৈতিক মনোবল দুর্বল থাকবে এবং নির্বাচনের দৌড়ে অনেক পিছে থাকবে। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচনে গেলে জনমনে সন্ধেহ সৃষ্টি হতে পারে যে বিরোধী দল আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়ে সরকারের চাপে ও পাতানো নির্বাচনে কিছু আসন পাওয়ার লোভে তারা নির্বাচনে গিয়েছে। এই সন্ধেহ খন্ডন করার মত তেমন জোড়ালো যুক্তি ও সময়ের অভাব তখন দেখা দিতে পারে।

সরকারবিরোধীদের মরনপণ আন্দোলনে নামা ছাড়া তাদের সামনে আর কোন বিকল্প নাই। তাই আমি মনে সকল ভয় ভিতি ও জেল, জুলুম ও নির্যাতনের কথা চিন্তা না করে সর্বাত্তক আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।

রোগ-শোকে হাসপাতালে থাকার সময় এখন আর নাই। আন্দোলন করতে হবে এবং সেই আন্দোলন করতে গিয়ে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত বিরোধী দলের সকল নেতা ও সক্রিয় কর্মীদের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত জেলে থাকার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। পুলিশ এর মধ্যে গ্রেফতার করলে কেউ আদালতে জামিনের আবেদন করতে পারবে না এবং রোগ শোকে কাতরের অজুহাত দেখিয়ে সরকারি নেতাদের কাছে তদবিরের জন্য ঘোরাগারি করা যাবে না।

আজ থেকে নির্বাচন পর্যন্ত জেলে থাকতে হবে যাতে জনগণের মধ্যে বিশ্বাস জন্মে সম্মিলিত বিরোধী দলের কেহই আতাতের নির্বাচনের জন্য যাবে না। প্রয়োজনে তারা বছর খানেক জেলে থাকবে তবু এই সরকারের অধিনে আতাত নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে না। সম্মিলিত বিরোধী দলের সবচেয়ে বড় শক্তি হল কোন অবস্থাতেই এই সরকারের অধিনে নির্বাচনে না যাওয়া। নির্বাচনকে বাধা নয় – নিজেদের সর্বাত্তক বয়কট করতে হবে। দালাল ফালাল যারা যায় যাক কিন্তু সেই নির্বাচন গ্রহনযোগ্য হবে না।

অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠিত হলে সেই সরকারের বিরুদ্ধে তখন যুক্তি ও ন্যায়সংগত ভাবেই আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করা হবে আগামী দিনের সবচেয়ে মোক্ষম রাজনীতি ।

সরকার বিরোধীদলগুলিকে কিছুতেই আমলে নিচ্ছে না। বর্তমানে সরকার বিরোধী আন্দোলনে কোন একক নেতৃত্ব মাঠে নাই। মাঠের কোন একজন নেতার ডাকে বা নির্দেশে কেউ মাঠে থাকছে না। পরস্পর দোষারোপ ও আদর্শহীন আনুগত্যের আধিপত্য চলছে। নির্দেশ বা ডাক নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়ানো হচ্ছে । কোন কার্যকরি চেইন অব কমান্ড বা নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা নাই ।

সবাই প্রতিনিধিত্বের দাবি নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত প্রভাব ও প্রাধান্য বিস্তারের সাময়িক অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর ফলে আন্দোলন প্রচন্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সফলতার সম্ভাবনার নিশ্চিত পরিনতির দিকে নিয়ে যেতে পারছে না। এখন এই সুযোগে যদি সরকার সংবিধান সংশোধন করে বর্তমান সংসদের মেয়াদ আরো ৫ বছর বা অনন্তকালের জন্য বাড়িয়ে দিয়ে প্রতি বছর ২০% হারে আলমকে শুন্য ঘোষনা করে এই বছর থেকেই ২০% তথা ৬০ টি আসনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে তাহলে বিরোধী দলগুলির কি করার থাকবে ??? তখন কি সরকার উনাদেরকে আন্দোলনের সুযোগ করে দিবে !!!

সম্মিলিত বিরোধী দলের দাবি – তদ্ধাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা সংবিধানে সন্নিবেশিত করে সরকারকে পদত্যাগ করে সেই সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

সরকার বলছে এটি নাকি মামার বাড়ীর আবদার ! সরকার যে এতে কোন কর্ণপাতই করছে না তা বিরোধী দলগুলি কিভাবে বুজবে তারও কোন অবস্থা দৃষ্যমান হচ্ছে না। তবে যারা বুজার তারা ঠিকই বুজে গেছে !! এখন বিরোধী দলগুলির এই প্রচন্ডতম দুর্বল অবস্থায় সরকারের পাতানো নির্বাচনের খেলায় না গিয়ে ঘরে বসে তাদের মত করে সংবিধান সংশোধন করে যত দিন খুশি মনের মাধুরী মিশিয়ে তারা ক্ষমতায় থেকে যাবার ব্যবস্থার জন্য তখন যদি নিম্ন লিখিত ভাবে সংবিধান সংশোধন করে তখন সবার কি করার থাকবে :

সংবিধানের বর্তমান ১২৩ এর ২ ধারার (৩) উপধারার (ক) ও (খ) বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সেখানে লিখা থাকবে বর্তমানে সংসদ চিরদিনের জন্য বলবৎ থাকবে তবে শর্ত থাকবে যে সংসদের ২০% আসন প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শুন্য ঘোষনা করবেন এবং সেখানে শুন্য ঘোষনার পরবর্তি ৯০ দিনের মধ্যে উক্ত ২০% শুন্য আসনে নির্বাচন হবে।

তখন এতে সুবিধা হতে পারে :

১। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তন হবে না বা প্রয়োজন পড়বে না।

২। পাতানো নির্বাচনের প্রয়োজন পড়বে না।

৩। ফি বছর নির্বাচন হবে ।

৪। প্রতি জেলায় ১ বা দুইটি আসনে নির্বাচন হবে তাতে নির্বাচনের জন্য খয় খরচ অনেক কমে যাবে।

৫। সংসদে প্রতিবছর ৬০ জন নতুন সংসদ সদস্য হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
৬। সরকার খুব সহজেই অবাদ, নিরপেক্ষ, সুষ্ট ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করাতে কোন ঝুকির মধ্যে পড়বে না।

৭। প্রশাসন ও পুলিশের তাকাব্বরি বন্ধ হয়ে যাবে।

৮। গনতন্ত্রের সুবাতাস বইবে।

৯। সংসদ শক্তিশালী হবে।

১০। রাজনৈতিক পরিবেশ শান্ত থাকবে এবং বিরোধী দলগুলি যার যার অবস্থান থেকে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।

১১। প্রধানমন্ত্রী নিরাপদ, নিশংখ্য ও নিশ্চিন্তময় থাকার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

১২। দেশের শৈন শৈন উন্নয়ন হবে।

১৩। ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা তৈরি হবে।

১৪। দেশে প্রচুর চাটুকার বৃদ্ধি পাবে এবং চাটুকারিতার পারস্পরিক প্রতিযোগিতা তুঙ্গে উঠতে পারবে।

বিষয়টির উপরে সকল মহলের বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ মনোযোগ আকর্ষন করছি।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : মন খুলে গালী দিতে পারেন আমাকে ।

প্রসঙ্গত, একটা সময়ে অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান ছিলেন পুরোদস্তর রাজনীতিবিদ। তিনি আগাগোড়াই ছিলেন বিএনপির সমর্থক ও দলটির একজন সিনিয়র নেতা। কিন্তু গেলো বছরের গোড়ার দিকে তাকে দল থেকে করে দেয়া হয় বহিস্কার। তবে এ বিষয় তার কাছে নতুন কিছু নয়। কারন এর আগেও তিনি হয়েছিলেন বহিস্কার বেশ কয়েকবার। বহিস্কার হওয়ার পরেও তিনি দল নিয়ে নানা ধরনের কথা বলে থাকেন ফেইসবুক এ দিয়ে থাকেন নানা ধরনের মতবাদ ।

About Rasel Khalifa

Check Also

র‍্যাবের এত উৎসাহী হয়ে ওঠার কারনও প্রশ্নবিদ্ধ, পুরানো সখ্যতা কি র‍্যাবকে তাড়িত করেছে জেমিনের উপর চড়াও হতে:শামসুল

সম্প্রতি নওগাঁ থেকে গ্রেফতার করে র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের কর্মকর্তাকে রাখার পরেই না ফেরার দেশে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *