বর্তমান সময়ে ভালোবাসার টানে সাত সমুদ্র পার হয়ে বাংলাদেশে ছুটে আসতে দেখা যাচ্ছে প্রেমিক প্রেমিকাদের। প্রেম মানে না কোনো বাধা সেটাই প্|রমান করলেন জেনিফার স্ট্রায়াস। তিনি বাংলাদেশে গোপালগঞ্জের যুবককে ভালোবেসে ছুটে এসেছেন। জানা গেছে, জার্মান কন্যা জেনিফার স্ট্রায়াস অনেক আগে থেকেই সম্পর্কে জড়ান ঐ যুবকের সাথে। তিনি তার প্রিয় মানুষটিকে বিয়ে করতে পেরে খুব খুশি।
বিদেশি পাত্রী পেয়ে পরিবারের সদস্যরা খুশি, খুশির বন্যা বইছে পাত্রের পরিবারে। কনেকে নিয়ে আনন্দময় মুহূর্ত কাটাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। রোববার গোপালগঞ্জে আদালতের মাধ্যমে জেনিফার স্ট্রস ও চয়ন ইসলামের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এই খবরে হত”বাক গোটা এলাকা। জার্মান কনেকে দেখতে দলে দলে লোক ভীড় করছে।
জার্মান তরুণী জেনিফার স্ট্রস গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। সেখানে তাকে স্বাগত জানান তার প্রেমিক চয়ন ইসলাম ও তার স্বজনরা। রাতে জেনিফারকে নিয়ে গোপালগঞ্জ শহরে আসেন চয়ন। নগরীর মডেল স্কুল রোডে চাচাতো ভাই আবদুর রহমানের বাড়িতে রাত কাটান তিনি। রোববার সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আদালতে গিয়ে বিয়ে করেন তারা।
প্রেমিক চয়নের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুড়া গ্রামে। তার বাবা রবিউল ইসলাম ইতালি প্রবাসী। চয়ন কিছুদিন ইতালিতে থাকার পর জার্মানিতে চলে যান। প্রায় পাঁচ বছর আগে, তিনি জার্মান ভাষা শেখার জন্য একটি শিক্ষা কোর্সে ভর্তি হন। সেখানে জেনিফারের সঙ্গে দেখা হয়। আর সেই পরিচয় থেকেই তারা প্রেমে পড়েন।
চয়ন ১০ মার্চ, ২০২২-এ বাংলাদেশে চলে আসেন। তা সত্ত্বেও, তাদের প্রেমের সম্পর্ক চলতে থাকে। দীর্ঘ প্রেমের যাত্রা শেষে অবশেষে প্রেমিক চয়নের কাছে এলেন জেনিফার। গোপালগঞ্জে পৌঁছে জেনিফারকে ফুল দিয়ে বরণ করেন চয়নের স্বজনরা।
তিনি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী। জার্মানির বাইলেফেল্ড স্টেটে বাবা-মার সঙ্গেই বসবাস করতেন। তার বাবার নাম জোসেফ স্ট্রায়াস ও মাতার নাম এসাবেলা স্ট্রয়াস। জেনিফার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশকে ভালোবেসে আমি খুশি। এখানকার পরিবেশ, আতিথেয়তা আর সবার ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
তিনি আরও বলেন, পরিবারের সবাই আমাকে আপন করে নিয়েছেন। সবার সাথে মিলেমিশে চলতে পেরে আমি খুশি।
চয়ন ইসলাম বলেন, জেনিফারের সঙ্গে আমার পরিচয় জার্মানিতে পড়ার সময়। পরিচয় থেকে ভালোবাসা। আমাদের দীর্ঘ ৫ বছরের সম্পর্ক। আমি সেখানে একটা চাকরি করতাম, সেটা ছেড়ে বাংলাদেশে চলে এসেছি। আমার ভালোবাসায় জেনিফারও বাংলাদেশে চলে এসেছে। আমরা বিয়ে করেছি। আমার ও জেনিফার পরিবারের সবাই খুব খুশি। জেনিফারের বাবা-মা কয়েকদিনের মধ্যে বাংলাদেশে আসবেন। তারপর জমকালো আয়োজনে বিয়ের অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা আছে।
চয়নের মা ঝর্ণা বেগম বলেন, জেনিফার এত সহজে আমাদের সঙ্গে মিশতে পারবে তা কখনো ভাবিনি। বৌমাকে পেয়ে আমরা সবাই খুশি। অল্প সময়েই সে সবার কাছে খুব আপন করে নিটে পেরেছে। আমরা সবাই আনন্দ-উৎসবের সাথে গ্রামের বাড়িতে কনেকে স্বাগত জানাব।
তরুণ-তরুনীরা আজ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে সম্পর্কে জড়াচ্ছে দেশ-বিদেশের তরুন-তরুনীদের সাথে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়া যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে , যেমন ভৌগলিকভাবে দূরবর্তী লোকেদের যোগাযোগ রক্ষা করতে। যার কারনে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তারা। বাংলাদেশে ইদানিংকালে অনেক প্রেমের টানে ছুটে এসেছেন। তবে অনেকে নিজ দেশে ফিরেও গিয়েছেন।