বেশ কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতি ভ”য়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছে। যার কারণে সেখানকার সাধারণ মানুষেরা ব্যাপক দূর্ভোগে পড়েছে। এদিকে চলমান সপ্তাহে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন সেখানকার সাধারণ মানুষকে প্রতি লিটার দুধ কিনতে গুনতে হচ্ছে ২০০ এর বেশি টাকা দিয়ে। সেখানে যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি হয়েছে সেটা অনেকের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। আটার দাম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
এমতাবস্থায় কৃচ্ছ্রসাধনের অংশ হিসেবে অংশ হিসেবে মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের বেতন-ভাতা ও যাতায়াত খরচ কমিয়ে আনছে দেশটির সরকার।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বুধবার তার মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের ইকোনমি ক্লাসে ভ্রমণ করতে বলেছেন, বিলাসবহুল গাড়ি এবং বাদ দিতে বলেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে তার সরকারের নেওয়া বেশ কয়েকটি নতুন পদক্ষেপ বছরে ২০০ বিলিয়ন টাকা সাশ্রয় করতে সহায়তা করবে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ বলেছেন, মন্ত্রিসভার সদস্যদের ব্যবহৃত সব বিলাসবহুল গাড়ি বাতিল করে নিলাম করা হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী মন্ত্রীদের নিরাপত্তার জন্য একটি মাত্র গাড়ি দেওয়া হবে। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপদেষ্টারা স্বেচ্ছায় তাদের বেতন না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন থেকে সব মন্ত্রী তাদের টেলিফোন, বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের বিল নিজেরাই পরিশোধ করবেন।” তবে বিদেশি অতিথিদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
শাহবাজ শরীফের মতে, সরকারের মন্ত্রী ও আমলাদের ব্যয় কমানোর কঠোর ব্যবস্থা হচ্ছে ঋণ চুক্তির আগে আইএমএফ যে শর্ত পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারই অংশ।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সব মন্ত্রনালয় ও সরকারি দপ্তরকে খরচ ১৫ শতাংশ কমাতে বলা হয়েছে। মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের বেতন ও যাতায়াত খরচ বাদ দেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তার মতে, দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের এই ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, যাদের খাদ্য ও ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই, কারণ মূল্যস্ফীতি ইতিমধ্যে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছেছে।
চরম অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ইতিমধ্যেই তলানিতে এসে ঠেকেছে। তিন সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য ইসলামাবাদের কাছে একটি ডলারও নেই।
পাকিস্তান সরকার গত কয়েক মাস ধরে আইএমএফ এর নিকট থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বেশ কয়েকবার বৈঠক করার পরেও সমঝোতায় যেতে পারেনি সরকার এবং আইএমএফ। যার কারণে আরো বেশি সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়েছে দেশটি। অদূর ভবিষ্যতে দেশটির অর্থনীতি যে পর্যায়ে যেতে পারে সেটা অসহনীয় হতে পারে সাধারণ মানুষের জন্য।