Saturday , April 1 2023
Breaking News
Home / Countrywide / এবার জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ভিন্ন এক কৌশলে নামলো জামায়াত

এবার জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ভিন্ন এক কৌশলে নামলো জামায়াত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় হয়ে উঠেছে। ক্ষমতাসীন দল আ.লীগ বেশ কয়েক মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছে, যার কারনে অনেক দলের রাজনৈতিক সক্রিয়টা ক্রমেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল হলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ আর এই দলটি বিএনপির সাথে জোটে থাকলেও দলটিকে কয়েকমাস আগে জোট থেকে সরিয়ে দিয়েছে তবে আনুষ্ঠানিকভাবে নয়। এবার আগামি নির্বাচনকে সামনে রেখে ভিন্ন ‘কৌশলে’ এগোচ্ছে জামায়াতে ইসলামী।

সরকার ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পদত্যাগসহ দশ দফা দাবি ও জনগণের বিভিন্ন ইস্যুতে কর্মসূচি দিয়ে তারা মাঠে নিজেদের শক্তি দেখানোর চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতিও রয়েছে। যেসব আসনে সাংগঠনিক শক্তি বেশি সেসব আসনেও তারা প্রার্থী ঠিক করেছে। তবে আপাতত দাবি আদায়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে থাকতে চান তারা। এজন্য তারা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবেন।

জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা আমাদের মতো করে সংগ্রামে যাবো। সময়ের সাথে সাথে এই আন্দোলন আরও বেগবান হবে সন্দেহ নেই। জামায়াতে ইসলামীর ১২ থেকে ১৫ শতাংশ ভোট রয়েছে। এখন বিষয়টি জোটবদ্ধ হলে এক ধরনের হিসাব, যুগপৎ হলে এক ধরনের হিসাব হবে। আমাদের লক্ষ্য এখন আন্দোলন করা। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা সফল হোক, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সরকারকে বাধ্য করা। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। আন্দোলন আগামীতে আরও জোরদার হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য বলেন, ২০১৬ সাল থেকে জামায়াত সমাজকল্যাণ ও সংগঠনের কাজ করে যাচ্ছে। এ সময়ে কয়েক লাখ কর্মী, ১০ হাজার রুকন বৃদ্ধি পেয়েছে।

জানা গেছে, একযোগে আন্দোলনের প্রথম দুই কর্মসূচির পর জামায়াতের হঠাৎ অনুপস্থিতির কারণ বিএনপি নেতৃত্বের প্রতি ‘ক্ষোভ’ বা ‘অভিমান’ থেকে। কারণ বিএনপি একযোগে সরকারবিরোধী আন্দোলনের যাত্রা বা কর্মসূচি নিয়ে অন্য সব দলের সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ করলেও জামায়াতের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। তা সত্ত্বেও জামায়াত বিএনপির সঙ্গে একযোগে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ২৪ ও ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলে অংশ নেয়। এর মধ্যে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় জনসভা করতে গিয়ে মালিবাগে পুলিশের টিয়ার গ্যাসের শেল ও লাঠিচার্জের শি”কার হয় নেতাকর্মীরা। অনেকে আহ”ত ও অনেকে গ্রেপ্তার হন। তবে এ ঘটনায় বিএনপি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জামায়াত পরবর্তী কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া থেকে কার্যত বিরত রয়েছে। তবে বিএনপির আগে বা পরে নিজস্ব কর্মসূচি ঘোষণা করে মাঠে সক্রিয় রয়েছে জামায়াত।

জামায়াতের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা বলেন, বিএনপি যেভাবে একা চলছে, তার নেতিবাচক দিকও রয়েছে। একটি হলো, জামায়াত আন্দোলনে একসঙ্গে মাঠে ও নির্বাচনের শক্তিশালী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারছে না। দুই, মানুষ হতাশ হয়ে পড়ছে। মানুষ যখন হতাশ হবে, তখন তাদের রাস্তায় নামানো কঠিন হবে। যে কারণে মাঠের আন্দোলনে এটা দুর্বলতা।

দলের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের টানাপোড়েন রয়েছে। এ কারণে বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচিতে জামায়াত নেই। যদিও শুরুতে দলটি দুটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিল। এখন তারা বিভিন্ন দিবসে কর্মসূচি পালন করছেন। রোববারও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও দলীয় আমিরসহ সব নেতার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় শহরে জামায়াতের বিক্ষো”ভ মিছিল কর্মসূচি ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতে ইসলামীর একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, জামায়াতের সব সময়ই নির্বাচনের প্রস্তুতি থাকে। আগামী ১০ বছরের জন্য প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়েছে। দলটিতে এ, বি এবং সি ক্যাটাগরির এলাকা রয়েছে। এ এবং বি ক্যাটাগরির প্রার্থীদের ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন সি ক্যাটাগরির প্রার্থী নির্ধারণ করা হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এটা করা হচ্ছে এমন বিষয় নয়। এটি একটি দলের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অংশ। জামায়াতের দুটি বিভাগ- অভ্যন্তরীণ নির্বাচন বিভাগ এবং স্থানীয় জাতীয় নির্বাচন বিভাগ। এর দায়িত্বও আলাদা। তারা এসব কাজ করে থাকে।

এদিকে, গত বছরের ২ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর ২০২৩-২০২৫ মেয়াদের জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে ৮৬টি সাংগঠনিক জেলা শাখা এবং এর আওতাধীন উপজেলা, থানা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কয়েক বছর ধরে দলটি প্রকাশ্যে সক্রিয় না হলেও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে নীরবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা কয়েক মাস আগেও তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল, তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নতুন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে রাজনীতিতে। যাইহোক, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধের পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং রাজনৈতিক সহিং”/সতার বিষয়টি প্রকট হয়ে উঠেছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিবে এটি আশা করছে সুধী সমাজের মানুষেরা।

About bisso Jit

Check Also

একসঙ্গে উধাওয়ের পরে বাসায় ফিরে যা জানালো সেই ৪ কিশোরী

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চার কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে এবং এই ঘটনায় বেশ কৌতুহূল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *