বাংলাদেশ ক্রিকেটের জাতীয় দলের এক সময়ের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন নাসির হোসাইন। যিনি একটা সময়ে ছিলেন দলের অনেক ভরসাবান একজন খেলোয়াড়। তবে ফ্রমহীনতার কারনে অনেক বছর ধরেই রয়েছেন দলের বাইরে। কিন্তু সমালোচনা ছাড়েনি তার পিছু। একেরপর এক বিতর্কিত কর্মকান্ড ঘটিয়ে তিনি বার বার এসেছেন আলোচনায়। বিষয়ে করে তালাক না দিয়ে অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগ ওঠে ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিরুদ্ধে। এরপর এ নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি।
এ দিকে তালাক না দিয়ে অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার বিচার চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধেও বিচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তারকে দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুরশিদ আহমেদ রিভিশন খারিজ করে এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুরশিদ আহমেদ বদি ও আসামিপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ চূড়ান্ত আদেশের দিন ধার্য ছিল।
২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দেন। তবে মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তার।
এরপর গত বছরের ৬ মার্চ মহানগর দায়রা আদালতে অভিযোগ দায়েরের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন দাখিল করেন নাসির ও তামিমা।
২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলা করেন তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান। ওই দিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে তিনি পিবিআইকে মামলার অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের একটি আট বছরের মেয়েও রয়েছে। তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, যখন তামিমা এবং নাসিরের বিয়ের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, তখন তা রাকিবের নজরে আসে। পরে তিনি পত্রিকায় ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারেন। এরপর ডিভোর্স পেপার ছাড়া বিয়ে করার অভিযোগে নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানার বিরুদ্ধে মামলা করেন রাকিব।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকার সময় তামিমা নাসিরকে বিয়ে করেন, যা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। তামিমা নাসিরের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়। তামিমা ও নাসিরের অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে রাকিব ও তার আট বছরের মেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আসামিদের এমন কর্মকাণ্ডে রাকিবের চরম মানহানি হয়েছে, যা তার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
এরপর ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা এবং তামিমার মা সুমি আক্তারকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাকিবকে তালাক দেননি তামিমা। আইনত রাকিব ডিভোর্সের কোনো নোটিশও পাননি। অন্যদিকে তামিমা তালাকের নোটিশ জাল করে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রকাশ করেন। তামিমা তাম্মি এখনও রাকিবের স্ত্রী, কারণ তার যথাযথ প্রক্রিয়ার কারণে তালাক হয়নি। দেশের ধর্মীয় নিয়ম ও আইন অনুযায়ী, একজন স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা তামির বিয়ে অবৈধ।
প্রসঙ্গত, এ দিকে এখন বেশ সুখেই আছেন নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা।তাদের ঘর আলো করে সম্প্রতি এসেছে একটি সন্তান। বর্তমানে তামিমা সংসার আর সন্তান নিয়েই কাটাচ্ছেন বেশ ভালো সময়। আর নাসিরও ফিরে পেতে শুরু করেছে তার পুরোনো ক্রিকেটের রূপ। এর মধ্যেই তাদের এই বিচার প্রক্রিয়া চলার বিষয়টি একটি বড় দুঃসংবাদই বটে তাদের জন্য।