বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) (Border Guard Bangladesh) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী (Major General Mohammad Ashraful Azam Siddique) এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ৭ ও ৮ মে তারিখে বিএসএফ (BSF) বাংলাদেশে মোট ২০২ জন নাগরিককে জোরপূর্বক পুশ ইন করেছে। এদের মধ্যে অনেকে দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করছিলেন এবং তাদের মধ্যে কারো কারো সন্তান ভারতে জন্মগ্রহণ করায় আধার কার্ডসহ বিভিন্ন ডকুমেন্টস পেয়েছে। বিএসএফ এসব ডকুমেন্ট রেখে দিয়ে সীমান্তে তাদের বাংলাদেশে পুশ ইন করেছে।
রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো ও মানবাধিকার ইস্যু
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৯ জন রোহিঙ্গা (Rohingya) শনাক্ত হয়েছে, যারা পূর্বে বাংলাদেশের এফডিএমএন ক্যাম্পে নিবন্ধিত ছিল। তারা ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল এবং ভারতের ইউএনএইচসিআর (UNHCR) এর রেজিস্ট্রেশনে রিফিউজি আইডি পেয়েছিল। এখন তারা ক্যাম্পে ফিরে এসেছে, তবে এটি একটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Ministry of Foreign Affairs) এবং বিজিবি এই বিষয়টি ভারতের কাছে উত্থাপন করবে বলে জানানো হয়েছে। বিএসএফ এখনো এসব পুশ ইন স্বীকার করছে না এবং বলছে যে এসব ব্যক্তি নিজেরাই ভারতে গিয়েছিল এবং নিজেরাই ফিরে এসেছে। বাংলাদেশ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
মেজর জেনারেল সিদ্দিকী বলেন, “আমরা ফ্ল্যাগ মিটিং করে প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।”
সীমান্তে নজরদারি ও উদ্ধার অভিযান
খাগড়াছড়ি (Khagrachari) সীমান্তে ২০০ থেকে ৩০০ জন নাগরিককে পুশ ইন করার চেষ্টা করে বিএসএফ। তবে বিজিবি ও কোস্টগার্ড (Coast Guard) এর সজাগ দৃষ্টি ও কড়া পেট্রোলিংয়ের কারণে তারা ব্যর্থ হয়।
অন্যদিকে, সুন্দরবন (Sundarbans) এলাকার মান্দারবাড়িয়া চর (Mandarbaria Char) দিয়ে একটি ভারতীয় জাহাজে করে ৭৮ জনকে পাঠানো হয়। তাদের কোস্টগার্ড উদ্ধার করে নিজ নিজ এলাকায় পাঠানোর কার্যক্রম শুরু করেছে।
পুলিশ (Police) এর মাধ্যমে যাচাইকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে, প্রশাসনের সহায়তায় তাদের নিজ এলাকায় পাঠানো হচ্ছে।
মহাপরিচালক আরও জানান, অবৈধ পুশ ইন বন্ধে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।