বাংলাদেশে আশরাফুল হোসেন, ওরফে হিরো আলম একটি ভিন্ন ধরনের নাম। জনপ্রিয় এই ইউটিউবার হিরো আলম নামেই সর্বাধিক পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি ডিশ ব্যবসায়ী থেকে এখন বিনোদন জগৎ এমনকি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে রাজনীতিতে একজন আলোচিত ব্যক্তি। তাকে নিয়ে অনেকে কটাক্ষ করলেও অনেকের নিকট তিনি একজন বিশেষ ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন। তিনি মূলত জনপ্রিয়তা পেয়েছেন সংগীতের ভিডিও, মডেলিং, হাস্য রসাত্মক অভিনয় ও গায়ক হিসেবে। তবে বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েও পাদপ্রদীপের নিচে চলে এসেছেন এই মডেল।
১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তিনি অল্পের জন্য একটি আসনে পরাজিত হন। এরপর তিনি দেশের টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হন। নির্বাচনের সময় সিলেটের এক ব্যক্তি হিরো আলমকে একটি মাইক্রোবাস উপহার দেন। এ নিয়ে চলে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। তিনিও গাড়িটি গ্রহণ করেন।
হিরো আলম ওই গাড়িটিকে অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে মানবসেবায় ব্যবহারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এর পর স্বেচ্ছায় তাকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ভাস্কর্য নির্মাণ করেছেন। সেটিও এখন সারাদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে হিরো আলম তার ভেরিফায়েড ফেস”বুক পেজে ভাস্কর্যের সঙ্গে একটি সেলফি পোস্ট করেন। সেই পোস্টে হিরো আলম লিখেছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ভাস্কর্য তৈরি হলো। তার এই পোস্ট ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
এদিকে হিরো আলমের ভাস্কর্যটি তৈরি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের ছাত্র উত্তম কুমার। তিনি বলেন, বিভাগের স্টাডি ওয়ার্ক হিসেবে আমরা অনেক কাজ করি।
২০১৮ সালে হিরো আলমের ক্যারেক্টারটা নিয়ে ভাস্কর্যটা একটি স্টাডি ওয়ার্ক হিসেবে তৈরি করেছি। শুধু ভালো লাগার জায়গা থেকে এটি করা হয়েছে। হিরো আলমকে চরিত্র হিসেবে গ্রহণ করার কারণ হলো, তার চেহারার মধ্যে অন্য রকম একটা ব্যাপার আছে, যেটি আমরা ভাস্কররা খুব পছন্দ করি। ওই ধাঁচটা সাধারণ মানুষের চেহারায় থাকে না।
উত্তম কুমার জানান, হিরো আলমের ভাস্কর্যটি তৈরি করতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে হিরো আলমের আবক্ষ ভাস্কর্য তৈরির পর ছবি তুলে ফে’সবুকে আপলোড করার পর তা নিয়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে হিরো আলম কয়েকজনকে নিয়ে জগন্নাথ হলে এসে ভাস্কর্যটি দেখে গিয়েছিলেন।
ভাস্কর্যটি শেষ করার পরে, আমি এটি নিজের কাছে রাখি। হিরো আলমকে এটা দেওয়া হয়ে ওঠেনি। জগন্নাথ হলের দক্ষিণ ভবনে আমার কক্ষেই ভাস্কর্যটি রাখা আছে। ২০১৮ সালের পর হিরো আলমের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। হিরো আলম চাইলে ভাস্কর্যটি হস্তান্তর করবো।
উত্তম কুমার চারুকলা ভাস্কর্য বিভাগের একজন ছাত্র, যিনি ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়ন করেন। জগন্নাথ হলের জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ভবনে বর্তমানে থাকছেন। উত্তমের ছাত্রাবাসে বর্তমানে প্রদর্শিত এই ভাস্কর্যটি দেখতে অনেকে ভিড় করছেন। হিরো আলমের ভাস্কর্যটি এই শিল্পীর দক্ষতা এবং সৃজনশীলতা প্রদর্শন করছে। ভাস্কর্যটি ছাত্র এবং দর্শকদের কাছ থেকে একইভাবে অনেক মনোযোগ পেয়েছে।