ট্রেন বাংলাদেশের যাতায়াত ব্যবস্থার অন্যতম জনপ্রিয় এবং সহজ একটি মাধ্যম। তবে এই ট্রেন ভ্রমণই এখন যেন একটি বিপদ আর হেনস্থার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যাত্রীদের জন্য। বিশেষ করে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বুধবার (১ মার্চ) সকাল থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়। টিকিট সংগ্রহের নতুন নিয়মকে জটিল মনে করছেন অনেক সাধারণ যাত্রী। এই পদ্ধতি আয়ত্ত করতে অনেক যাত্রীকে বেগ পেতে হয়।
অনেক যাত্রী জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে টিকিট সংগ্রহের নতুন তথ্য জানেন না। ফলে টিকিট সংগ্রহ করতে অনেক সময় লেগে যায়। সিস্টেমটি নতুন হওয়ায় কর্মীরাও কাউন্টারে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় নিচ্ছেন।
নতুন পদ্ধতিতে টিকিট বিক্রির প্রক্রিয়া দেখতে সকালে কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে তিনি রেলওয়ে কর্মকর্তাদের কাছে পিওসি (পয়েন্ট অব সেলস) মেশিন হস্তান্তর করেন।
টিকিট কালোবাজারি রোধে এনআইডি দিয়ে যাত্রীদের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যাত্রীদের টিকিট কেনার আগে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। আজ বুধবার (১ মার্চ) থেকে শুরু হয়েছে ‘টিকিট ঝাড় উজাড় তর’ নামের এই প্রক্রিয়া।
সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, এনআইডি ও জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করছেন যাত্রীরা। তারা জানান, প্রথম দিকে তারা কিছু সমস্যার সম্মুখীন হন।
যাত্রীদের মানতে হবে যে ৭ শর্ত
রেলভ্রমণে ৭ শর্ত মেনে চলতে বলা হয়েছে যাত্রীদের। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী যাত্রীরা বাবা মায়ের নাম ও এনআইডি দিয়ে নিবন্ধন করা রেলের অ্যাকাউন্ট বা জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। এমন ক্ষেত্রে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত নামেরর সঙ্গে যাত্রীর সম্পর্ক যাচাইয়ের জন্য ভ্রমণকালে বাধ্যতামূলকভাবে জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে।
বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে তাদের পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে পাসপোর্টের ছবি আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন শেষ করতে পারবেন।
সফলভাবে এনআইডি/পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধন যাচাইপূর্বক নিবন্ধন ছাড়া কোনো যাত্রী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন না।
ভ্রমণকালে যাত্রীকে অবশ্যই নিজস্ব এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি অথবা পাসপোর্টের ছবি সম্বলিত আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে।
পরিচয়পত্রের সঙ্গে টিকিটের ওপরে মুদ্রিত কপিতে যাত্রীর তথ্য না মিললে বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করা হবে এবং রেলের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যাত্রীরা আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এনআইডি/জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্টেরর মাধ্যমে রেলওয়ের সিস্টেম থেকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করতে পারবেন।
দেশের বিভাগীয় শহরের রেলস্টেশন ও আন্তঃনগর ট্রেনের শুরুর স্টেশনগুলোতে সর্বসাধারণের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য একটি হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে।
প্রসঙ্গত, এ দিকে নতুন এ নিয়ম নিয়ে এখন চলছে বেশ সমালোচনা। তবে এটাকে মানিয়ে নিতে বলা হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। কারন এটার মাধ্যমেই দেশের ট্রেনের টিকেটের কালোবাজারি বন্ধ করা সম্ভব হবে।