মাশরাফি বিন মর্তুজা বাংলাদেশের একজন নামি ক্রিকেটার এবং সেই সাথে তিনি যুক্ত হয়েছেন রাজনীতির সাথে। তিনি তার এলাকা নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। সেখানকার মানুষের নিকট তিনি ইতিমধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তিনি এমপির পাশাপাশি আ.লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে কিছুদিন আগে পদ পান। তিনি বেশিরভাগ সময় অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের মতো প্রটোকল নিয়ে চলেন না। এবার এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলছি, আমি প্রটোকল পছন্দ করি না এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি না যে আমাকে এভাবে রিসিভ করা লাগবে। আমি নিজ দায়িত্বে প্রতিটি ইউনিয়নে (সভাবেশস্থলে) পৌঁছে যাব।’
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে অফিসিয়াল ফে”সবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন মাশরাফি।
‘জনতার মুখোমুখী জনতার সেবক’ নামে একটি কর্মসূচি পালনের সময় একদল লোক উচ্চশব্দে হর্ণ বাজিয়ে এবং বে”পরোয়াভাবে মাশরাফিকে রিসিভ করতে যায় মোটরসাইকেলের একটি বড় বহর নিয়ে পথচারীদের বিরক্ত করে এবং একইভাবে সভাস্থলে যায়। তাই তাদের উদ্দেশে মাশরাফি বলেন, ‘আমাকে এভাবে রিসিভ করার দরকার নেই। এ বিষয়ে আমি সম্মানিত বোধ করা তো দূরের কথা বরং সবসময় বিব্রত হই।’জনদুর্ভোগ এড়াতে মাশরাফি বিশেষভাবে অনুরোধ জানান ওই স্ট্যাটাসে।
পাঠকদের জন্য মাশরাফির স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো-
সম্মানিত এলাকাবাসী,
আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমি পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন ভিত্তিক মতবিনিময় সভায় যোগদান করছি এবং আপনাদের মূল্যবান মতামত, অভাব-অভিযোগ এবং প্রত্যাশা শুনেছি, যার মাধ্যমে আমি সরাসরি মনের কথাগুলো জানতে পেরেছি এবং আমার কথাগুলি সরাসরি আপনার কাছে উপস্থাপন করার সুযোগ পেয়েছি।
প্রিয় এলাকাবাসী,
আপনারা জানেন, আমি পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ইউনিয়নে ছুটে যাচ্ছি। যখন যে ইউনিয়নে যাচ্ছি, ওই ইউনিয়নের জনসাধারণের কথা একান্তই শুনতে চাই, যাতে কোনো ব্যক্তি কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে আমার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারে। সবার সামনে না কথা বললে আমাকে লিখিতভাবে গোপনে আপানাদের কথাগুলো আমাকে জানাতে পারেন, এই পরিবেশ বজায় রাখার জন্য বরাবরের মতো আয়োজকদের আবারও অনুরোধ করছি। আমি আয়োজকদের বিশেষভাবে অনুরোধ করছি কেউ যাতে কথা বলতে এসে ফিরে না যান, সেদিকে খেয়াল রাখার।
আরেকটি বিষয় আমি লক্ষ্য করেছি যে, আমি যেখানেই যাই না কেন, মোটরবাইকের একটি বড় বহর বেপরোয়াভাবে জোরে জোরে হর্ন বাজিয়ে আমাকে রিসিভ করতে আসে, পথচারীদের হয়রানি করে এবং একইভাবে আমাকে অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে যায়। আমি তাদের বলব, আমাকে এভাবে রিসিভ করার দরকার নেই। এতে সম্মানিত হওয়া তো দূরের কথা, আমি সবসময় বিব্রতবোধ করি।
এমনকি আমার নড়াইলের সচেতন জনসাধারণও এটা পছন্দ করবে না। সত্যি বলতে, আমি প্রোটোকল পছন্দ করি না এবং আমি নিরাপত্তাহীন বোধ করি না যে আমাকে এইভাবে রিসিভ করতে হবে। আমি নিজ দায়িত্বে প্রতিটি ইউনিয়নে পৌঁছে যাব।
আপনাদের কেউ যেতে চাইলে সরাসরি সভাস্থলে যান, চলে যাবেন, ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা হলে কথা বলবেন, না হলে কখনো এমন পরিবেশ সৃষ্টি করবেন না যেন আপনার/ আপনাদের কারণে ওই ইউনিয়নের জনসাধারণ আমার সঙ্গে কথা বলা থেকে বঞ্চিত হন এবং মহোত্তম এই সভাটি আপনার/আপনাদের কারণে কোনো প্রকারে নষ্ট হয়।
আমি স্পষ্টভাবে বলছি যে, আমি যখন যে ইউনিয়নে মিটিংয়ে যাব, সেই মিটিংটি শুধুমাত্র ওই ইউনিয়নের জনসাধারণের জন্য সংরক্ষিত। আমি আবারো অনুরোধ করছি, সংশ্লিষ্টদের এসব বিষয়ে খেয়াল রাখার জন্য।
উল্লেখ্য, মাশরাফি বিন মর্তুজা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একজন সফল অধিনায়ক। তবে তিনি রাজনীতিতে এসে ক্রিকেটে নিজেকে খুব বেশি সময় দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। এদিকে তিনি ক্রিকেট থেকে আপাতত অবসরে যাওয়ার ঘোষনাও দেননি। তিনি বিপিএলে অংশ নিয়ে দূর্দান্ত পারফর্ম করেন।