আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে অঘটন ঘটার সম্ভবনার কথা জানালেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করছেন তাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। এবার তিনি মহিলা লীগের সভানেত্রীর সনদ বাতিল করার বিষয়ে মুখ খুললেন। তিনি তার সনদ পেয়েছেন কিনা সেটা নিয়ে সংশয়ের কথাও জানান।
তিনি বলেন, ওরা কি আমি জানি না। ওরা মনে করে ওরা বুদ্ধিজীবী। এই বুদ্ধিজীবীদের কাজ বাংলাদেশকে আটকে দেওয়া। আর এই অগ্রগতি ঠেকাতে হলে শেখ হাসিনাকে আটকাতে হবে তার দলকে আটকাতে হবে। আর এ জন্য যা করতে হবে তা হলো মিথ্যা অপপ্রচার। মিথ্যা অপপ্রচারের শিকার মহিলা লীগের সভাপতি শিরিন আপা।
তিনি আরও বলেন, উনার নাকি মুক্তিযুদ্ধের সনদ বাতিল করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সনদ কখন বাতিল করা হয়? যখন কেউ সার্টিফিকেট পায়। তিনি সার্টিফিকেটই তো পাননি, তা হলে বাতিল হলো কীভাবে? কেউ যদি ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা না দেয়, তাহলে তার সার্টিফিকেট বাতিল হবে কী করে? তিনি আদালতে গেলেন, এটা উনার ব্যাপার, সেটা ভিন্ন সাবজেক্ট। শিরিন আপার মতো মানুষ মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী এবং মুক্তচিন্তা নিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণেই বড় বড় জাতীয় পত্রিকাগুলো এসব খবর করছে। তিনি মানুষ তৈরির হাতিয়ার। যোগ্যতা না থাকলে তোলারাম কলেজ, মহিলা কলেজ, হরগঙ্গা কলেজ, গাজীপুর কলেজের অধ্যক্ষ হতে পারতেন? তাহলে আপনি কাকে খাটো বানানোর চেষ্টা করছেন? উনারা আটকাতে চান, উনারা অপপ্রচার করছেন। একই অপপ্রচার দেখেছি ৭৪ সালে।
শনিবার (৪ মার্চ) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ ক্রিয়েটিভ গ্র্যাজুয়েট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত মুজিব শতবার্ষিকী উপলক্ষে স্মৃতিসৌধের মোড়ক উন্মোচন ও উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা লীগের সভাপতি অধ্যাপক ডা. শিরিন বেগম।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটি স্লোগান শুনেছি। ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম, শেখ হাসিনার বাবার নাম’। আমি মনে করি আমি জাতির পিতার সৈনিক হতে পারিনি। আমার হাত-পা বাঁধা। নইলে জনগণের কাছে যদি ভালোভাবে বিচার দেই, জনগন কীভাবে তাদের কাছে পৌঁছাবে তা আমরা জানি না।
আমরা মাফ করে দিয়েছি। আমরাও মানুষ, রোবট নই। সারাক্ষণ শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে আমাকে গালাগালি করে। আমি এ গুলো গায়ে মাখি না। ওরা মিথ্যা বলে তাদের জন্য আমার মায়া লাগে। কিন্তু শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপস করতে পারি না। নারায়ণগঞ্জ শান্তিতে থাকুক। এ ধরনের বক্তব্য দেবেন না, মানুষ ঘরে বসে থাকবে না। জনগণের কাছে বিচার দিলে বাড়ির ইট থাকবে না।
হিন্দু সমাজের কাছে সবচেয়ে শ্রদ্ধার বিষয় হরে কৃষ্ণ হরে রাম। যারা এসব স্লোগান দেয়, তারা কত বড় সা”ম্প্র”দায়িক শক্তি হতে পারে ভেবে দেখুন। শেখ হাসিনা মুসলমান, বঙ্গবন্ধুও মুসলমান। আমি মুসলমান ও সনাতনদের জিজ্ঞাসা করতে চাই যে তারা হিন্দু ধ”’র্মকে আ”ঘাত করছে কারা? তারা উভয় ধর্মকেই সমানভাবে আঘা”ত করে। মানুষ পু”/ড়িয়েছে।
আগামীতে দেশের ক্ষতি হবে এমন আশ”/ঙ্কা করে তিনি বলেন, দেশটাকে একটা আঘাত করা হবে পেছনের দিকে যাওয়ার জন্য। সামনে নিয়ে যাওয়ার কথা নয়। আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে বাংলাদেশে আঘাত আসবে, সর্বোচ্চ জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যে। তারা আবারও বাংলাদেশে লা”/শের রাজত্ব তৈরি করবে, এমনকি প্রয়োজনে তাদের দলের বড় বড় নেতাদেরও হ”/ত্যা করবে। এটা করে তারা ইস্যু তৈরির চেষ্টা করবে কারণ তারা যেভাবেই হোক নির্বাচন ঠেকাতে চায়। কারণ তারা পারবে না। শেখ হাসিনার ওপর আল্লাহর রহমত আছে আর তাই ২২ বার হত্যার চেষ্টা করেও তারা কিছু করতে পারেনি।
তিনি বলেন, কে কার উকিল বাপ আর কে কার উকিল মা দেখার সময় আর নেই। এতে নারায়ণগঞ্জের মানুষ খুবই ক্ষুব্ধ। অনেক মানুষ আছে যারা যারা দেবোত্তর সম্পত্তি দখল করে না, যারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করে, যারা স্বাধীনতার পক্ষে রাজনীতি করে।
কিছু মিডিয়া দেখছি, তারা সবসময় শেখ হাসিনাকে দমন করার চেষ্টা করছে, তারা স্বাধীনতার শক্তিকে দমন করতে চায়। তারা বাংলাদেশের অগ্রগতি ঠেকাতে চায়। শেখ হাসিনার দলকে দমন করতে চায়।
বিএনপি ২৭ দফা এমনভাবে দিয়েছে যে মনে হচ্ছে সমুদ্রের পানি চিনিতে পরিণত হবে। আপনারাই তো ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে শত শত হিন্দু নারীদেরকে খারাপ কাজ করেছিলেন। এটা করে তারা নির্বাচনকে ব্যাহত করতে চায়।
আ.লীগের দেশের অগ্রগতিতে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড প্রসংগ তুলে বলেন, শহর ও গ্রামীণ দরিদ্রদের পাশাপাশি মধ্যবিত্তদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থনের একটি শক্তিশালী ভিত্তি রয়েছে এবং দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সফল হয়েছে আ.লীগ। তবে দলটি বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ এবং দুর্নীতির জন্যও সমালোচনার মুখোমুখি হলেও সার্বিক দিক থেকে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য এগিয়ে রয়েছে।