আসিফ আকবর, বাংলাদেশের গানের জগতের একটি বড় নাম তিনি। একটা সময়ে তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের রাজপুত্র। তবে আগের মত গানের জগতে সেই ভাবে ঝড় তৈরী করতে না পারলেও তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা কমেনি এখনো। আর সেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করে তিনি সম্প্রতি দিয়েছেন একটি স্ট্যাটাস। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
ক্যারিয়ারের উত্তাল সময়ে ফ্যান ম্যানেজমেন্ট নিয়ে বেশ বিপদেই ছিলাম। মোবাইলের অস্থির যুগ ছিলোনা, ক্যাসেটের গায়ে লেখা কুমিল্লা বাসার ঠিকানায় চিঠি আসতো। সেই চিঠি ঢাকায় নিয়ে এসে উত্তর লিখে রিটার্ন চিঠি পাঠাতাম। তারকা ফারকা খ্যাতি কিংবা ক্ষতি নিয়ে ভাবিত ছিলাম না কখনোই। প্রেমাক্রান্ত কিশোরী কিংবা বিরহকাতর প্রেমিকের উন্মাতাল ভালবাসা আমাকে ছুঁয়ে যেতো। কোন গলি থেকে উঠে গানের জগতে এসেছি সেটা ভাল করেই জানি। এতো এতো চিঠি পেয়ে আপ্লুত হতাম। কত শত ভালবাসা আবেগ থাকতো প্রত্যেকটা খামের ভিতরের সেই কাগজটায়, ভাবতেই বিচিত্র অনুভূতি জন্ম নেয়।
আমিওতো সাধারন একজন মানুষ। ভাগ্য আমাকে টেনে নিয়ে গেছে মানুষের বুকের গহীনে লালিত সরল ভালবাসার খুব কাছে। কাজের চাপে দেখা করা কিংবা কথা বলার সুযোগ ছিলোনা ততোটা। বহু ছেলে মেয়ের বিয়েতে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, সব না পারলেও বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি রেখেছি। রাজশাহীর মেয়ে লুবা’র তো বিয়ের দুদিন চলে গেছি ভুলে, গিয়ে বোকাও বনেছি, শান্তিও লেগেছে। আবেগের কাছে ভুল সাধারন একটা শব্দ মাত্র।
ভিখারুন নিসা নুন স্কুলের পাশেই দীর্ঘদিনের আবাস আমার। আসমা সুলতানা মনি সেই স্কুলের সেভেন এইটের ছাত্রী হবে, কাছেই কোথাও ছিল তার বাসা। সে আমাকে দেখতো জানতো, আমি তাকে চিনিনা। চটাং চটাং কথা বলে, চিনচিনে আবেগ তার স্বভাবের ধারেকাছেও নেই। ফোনে কথা হতো হালকা পাতলা, তারপর দেখাও হলো। আসমা’র দাবী ছিল তার বিয়েতে আমার উপস্থিত থাকতেই হবে। ভাবলাম হ্যাঁ বলে দিয়ে আপাতত মুসিবত থেকে রক্ষা পাই। খুব ছোট ছিল সে, কবে বিয়ে হবে কে জানে ! কথা দিয়েছিলাম – মনি তোমার বিয়েতে পিংক বেলুন নিয়ে আসবো। মেয়েটা শেষ পর্যন্ত বড় হয়ে গেল, বিয়ের পিড়িতেও বসলো। জামাই মামুনুর রশীদ আর মনি- দুজনেই ব্যাংকার। এ বছরের ১৩ই জানুয়ারী ঠিকই তাদের বিয়েতে হাজির হয়ে গেছি। শুধু ভুলে গেছি পিংক বেলুন নেয়ার শপথ, মনি ঠিকই মনে করিয়ে দিয়েছে। কি অদ্ভূত সাধারন মায়াময় গল্প।
ফটোগ্রাফার স্যার প্রায় দুইমাস প্রচন্ড পরিশ্রম করে আজকে ছবি দিয়েছে, ফটোক্রেডিটও দিবো দুইমাস পরে। সুখী হও আসমা সুলতানা মনি, তোমাদের মাঝেই শ্বাশতকাল বেঁচে থাকবো আমি… আমি সেটা জানি…
ভালবাসা অবিরাম…
প্রসঙ্গত, বর্তমানে আসিফ একবার আগের মত গানের জগতে না থাকলেও মাঝে মধ্য়ে তিনি গান গেয়ে থাকেন। এ ছাড়াও সম্প্রতি তিনি যোগদান করেছেন নতুন এক চাকরিতে। পরিবার নিয়ে এখন বেশ সুখেই আছেন তিনি।