বর্তমান আধুনিক যুগে এক দেশ থেকে অন্য দেশে অতি দ্রুত ও নিরাপদ যাতায়াতের ক্ষেত্রে আকাশ পথের যেন কোনো বিকল্পই দেখছেন না ভ্রমণ পিপাসু যাত্রীরা। তবে কখনো কখনো সেই যাত্রীদের কারণেই আকাশ পথে ঘটে থাকে নানা অনাকাঙ্খিত ঘটনা। সেই ধারাবাহিকতায় আবারো সামনে এলো ঠিক এমনই একটি ঘটনা।
জানা গেছে, এবার মাঝ আকাশে বিমানের দরজা খোলার চেষ্টা এবং ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে আঘাত করার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। গত রোববার (৫ মার্চ) বোস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে বোস্টনের একটি ফ্লাইটে ৩৩ বছর বয়সী ফ্রান্সিসকো সেভেরো টরেসকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে বিমানের দরজা খোলার চেষ্টা এবং ভাঙা চামচ দিয়ে একজন ক্রু সদস্যকে ‘আ”ঘা’ত করার অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ অনুসারে, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি এক ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে অবতরণের কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে, ককপিটে থাকা ক্রুরা একটি সতর্কতা পান যে একটি দরজা খোলা হয়েছে। এরপর একজন ক্রু সদস্যকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়। একজন কেবিন ক্রু পরে দেখতে পান একটি দরজার লক হ্যান্ডেল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা অবস্থায় নেই এবং লকটি ঘোরানো হয়েছে। ওই ক্রু সদস্য তাৎক্ষণিক হ্যান্ডেলটি সরানোর জন্য টরেসকে সন্দেহ করেন। কারণ আগে তাকে দরজার দিকে হাঁটতে দেখা গেছে। কেবিন ক্রুরা তাকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন দরজার চারপাশে ক্যামেরা আছে কিনা। তর্কের এক পর্যায়ে, ক্রু ক্যাপ্টেনকে বলে যে টরেস বিমানের জন্য হুমকি তৈরি করেছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিমানটিকে অবতরণ করা উচিত। পরে টরেস তার আসন ছেড়ে ক্রু সদস্যের কাছে যান এবং একটি ভাঙা ধাতব চামচ দিয়ে তাকে তিনবার আঘাত করেন। এ সময় বিমানের যাত্রীরা ক্রুকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন এবং টরেসকে সরিয়ে নেন।
টরেস মূলত বিমানের ভিতরে অদ্ভুত আচরণ করছিলেন এবং অবতরণের সময় সহযাত্রীকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, জরুরি প্রস্থানের দরজা কোন দিকে?
যাইহোক, ফ্লাইটটি পরে নিরাপদে অবতরণ করতে সক্ষম হয় এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ নেওয়ার জন্য ক্রু এবং যাত্রীদের ধন্যবাদ জানায়।
এদিকে দেশটির এক সংবাদ মাধ্যমের আলোকে জানা গেছে, সম্প্রতি এই বিমাটিতে অভিযুক্ত ওই যুবক যে অপরাধ করেছেন, তাতে দেশটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং দুই লাখ ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে। এ ঘটনা বেশ চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে দেশটিতে।