বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে প্রধান শহরের রাস্তা-ঘাট, অলিগলি কিংবা ফুটপথে দেহব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম ব্যাপক হারে বেড়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। যেটার কারনে অনেক সময় হয়রানিরও শিকার হচ্ছেন অনেক সাধাসিধা এবং এই ধরনের কর্মকান্ড এড়িয়ে চলা ব্যক্তিরা। এবার এই বিষয়টি নিয়ে নিজ অভিজ্ঞতার বর্ননা করলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের লেখক ও সমালোচক সুলতান মির্জা। তার পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য-
গাজীপুর চৌরাস্তা, টাংগাইল রোড, ঢাকা রোড, ময়মনসিংহ রোড ও জয়দেবপুর রোড- এই চার রাস্তায় সন্ধার পরে হাটাচলা করলে আপনার বেশি বেগ পেতে হবে না একজন দেহ ব্যবসায়ী খুজে পেতে। কারন আপনাকে চমক দিয়ে বোরখা হিজাব পড়া নারীটি এসে জিজ্ঞেস করবে, ভাই লাগাবেন? এক শট এতো টাকা, জায়গা আপনি দিলে এতো টাকা, জায়গা আমি দিলে এতো টাকা, কথা গুলো মুহুর্তের মধ্যেই বলবে যা আপনি যদি গ্রাম বা দেশের অন্য অঞ্চল থেকে আসা নতুন কেউ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি অবাক হবেন, এমন পর্দাশীল নারীরা এটা করে।
ভাওয়াল জাতীয় উদ্দ্যানের গেটের টিকেট ইজারা টেন্ডারে অংশ নিয়েছিলাম একবার। সিডিউল কিনে সিডিউল জমা দেওয়ার আগে জীবনে দ্বিতীয়বার ভাওয়াল জাতীয় উদ্দ্যানে ঢুকেছিলাম টাকার উৎস সম্মন্ধে অবগত হতে। কারন ঐবার আমারটা সহ সিডিউল ছিলো ৩ টা, যদিও ভাওয়াল জাতীয় উদ্দ্যান সম্মন্ধে একেবারে ধারনা ছিলো না টাকার উৎস সম্মন্ধে কথাটা বললে ভুল হবে। ধারনা অবশ্যই ছিলো, তবে দেখতে যাওয়াটা ছিলো জরুরী।
একদিন গেলাম, সব দেখা শেষে গেলাম নিষিদ্ধ জোনে, যেখানে যাওয়ার পরে আমি দিশেহারা, এতো মাদ্রাসার ছাত্রী জংগলে কি করে? আমার সহযোগী আমাকে বললো, ভাই এরা দেহ ব্যবসায়ী, জিজ্ঞেস করলাম বোরখা কেন? উত্তর পেলাম নিজেকে লুকাতে।
সেবার কনফিউশনে পরে গেছিলাম টেন্ডার জমা দিবো কি না চিন্তা করে, কারন ইজারার টেন্ডার পেলে এইসব বোরখাওয়ালী ছিলান সামলাতে হবে চিন্তা করেই মাথা ঘুরান্টি দিতাছিলো। ৮২ লাখ টাকা বিড করে সেকেন্ড বিডার হয়েছিলাম, ফাষ্ট বিডার ছিলো ১ কোটি ১০ লাখ প্লাসের। তারপরে আর ভাওয়াল জাতীয় উদ্দ্যানে যাইনি আজ পর্যন্ত না। এইজন্য যে দেহ ব্যবসার পার্টনার হতে চাই না।
উপরের দুইটা ঘটনা প্রবাহ আমাকে বুঝতে শিখতে বাধ্য করেছে যে, বোরখা হচ্ছে জাতীয় মুখ ঢাকা পতিতাদের পোশাক। এই পোশাকে যারা এদিক সেদিক যাবে তখন বুঝতে হবে যিনি পড়েছেন তিনি ছদ্মবেশি, বহুরুপী কেউ, তিনি বোরখা পড়েছেন যাতে উনাকে কেউ চিহ্নিত করতে না পারেন।
যদিও গাজীপুর চৌরাস্তা কিংবা ভাওয়াল জাতীয় উদ্দ্যানের বোরখা জাতীয় পর্দার ব্যবহার দিয়ে পুরো বোরখা পোশাক জাজমেন্ট করার সুযোগ নেই। তবে এই কথা তো সত্য, বোরখা দেহ ব্যবসায়ীদের জাতীয় পোশাক। সারা দেশে যেকোন জায়গা দেহ ব্যবসায়ী পাবেন বা পরিচয় পাবেন, নিশ্চিত থাকেন, তাকে আপনি খুজে পাবেন বোরখার আড়ালেই।
প্রসংগত, সামাজিক অবক্ষয়ের কারনে এই ধরনের কর্মকান্ড শুরু হয়েছে, দেশের অনেক শহর কিংবা মফস্বল শহরে। তবে এটা দিন দিন বেড়ে চলেছে। কোনো ধরনের প্রমান না থাকায় এদেরকে পুলিশও ধরতে পারছে না। এদের দ্বারা অনেক সময় কোনো কোনো ব্যক্তি প্রতারনার শিকারও হয়ে থাকেন যারা লজ্জায় এই ঘটনা নিয়ে কোনো আইনগত দিকে পদক্ষেপে যেতে পারেন না।