সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মেয়ের আপত্তিকর এক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর লজ্জায়-অপমানে আত্মহননের পথ বেঁচে বরগুনার তালতলীর এক গৃহবধূ (৩৫)। এ ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক শোরগোল। গতকাল ১১ মার্চ এমনই অভিযোগ জানান নিহত ওই গৃহবধূর মেয়ে ও স্বামী।
জানা যায়, তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া এলাকার আসাদুল হাওলাদার (২৫) একই এলাকার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কিশোরীকে (১৩) কয়েকবার উত্ত্যক্ত করে আসছিল। একবার আসাদুল মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার সাথে প্রেম করতে বাধ্য করে। একপর্যায়ে আসাদুল গোপনে মেয়েটির সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন। ভিডিও কলে কথা বলার সময় আসাদুল মেয়েটির নগ্ন ছবি রেকর্ড করেন। গত ৮ মার্চ মেয়েটির মাকে ভিডিও দেখানোর পর আসাদুল ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। একদিনের মধ্যে টাকা না দিলে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি দেন তিনি। একদিন পর টাকা না পেয়ে আসাদুল ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন, যা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকালে ব্যাটারির এসিডের পানি পান করেন ওই গৃহবধূ। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী বলেন, আসাদুল আমাকে প্রতিনিয়ত হয়রানি করতো। এক পর্যায়ে তার সাথে কথা বলি। পরে সে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে এবং ভিডিও কলে নগ্ন হয়ে কথা বলতে বাধ্য করে। পরে ভিডিওটি রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে আমার মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। এই লজ্জায় আমার মা আত্মহত্যা করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। বিচার না পেলে আত্মহত্যা করব।
আসাদুলের মা বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে আমার ছেলে যদি এই ঘটনা করে থাকে তাহলে আমিও তার বিচার চাই।
এদিকে এ ঘটনায় তালতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।