ডঃ ইউনুস বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী একজন ব্যক্তিত্ব। তিনি বিশ্বের একজন প্রক্ষায়ত অর্থনীতিবিদও বটে। আর এই কারণে বিশ্বের অনেকেই তাকে করে থাকেন বেশ সমীহ। সম্প্রতি তাকে নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয় আর সেই সংবাদটি হলো তার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বের ৪০ জন নেতা দিয়েছেন বিবৃতি। এবার এ নিয়ে একটি লেখনী লিখেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
ডঃ ইউনুসকে নিয়ে ৪০ জন বিশ্বনেতার বিবৃতি দেখলাম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট এই বিবৃতি পূর্ণপাতা বিজ্ঞাপন হিসাবে ছাপিয়েছে।ছোট্ট একটা প্রশ্ন, হিলারি ক্লিনটন,আল গোর ও বান কি মুনদের মত ব্যাক্তিদের বিবৃতি কেন কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন আকারে দিতে হল,কেন এটা সংবাদ আকারে আসলো না? বিবৃতি দাতারা’তো বিজ্ঞাপন দেননি, তাহলে, বিজ্ঞাপনের এই টাকা কে পরিশোধ করেছেন?
এই বিজ্ঞাপন থেকেই দেশের প্রথম আলো,ডেইলি স্টারসহ কয়েকটি পত্রিকা তা সংবাদ আকারে প্রকাশ করেছেন। সেখানে তারা “ওয়ার্ডপ্রেস” এর একটি লিংকও বিস্তারিত উৎস হিসাবে দিয়েছেন, যেটা ডঃ ইউনুসের নামে খোলা, এটাও খোলা হয়েছে ওনার নামেরই একটি ইমেইল আইডি দিয়ে। পুরাই ইউনুসময় একটি ভেঞ্চার।বিশ্ব নেতাদের কারও কোন ওয়েবসাইটে এই বিবৃতি নেই কেন?
ঢুকলাম, ওয়ার্ডপ্রেস এর পেইজটিতে, যা দেখলাম, তাতে আক্কেলগুড়ুম। মনে হয়েছে বাংলাদেশ বিরোধী একটা প্লাটফর্মে ঢুকলাম। বাংলাদেশ নিয়ে যত নেতিবাচক কিছু আছে বিশ্বের বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং পত্রিকাতে,তা দিয়ে ভরপুর, আর শুধুই ইউনুসের গুনগান। মানবাধিকার, ভোটাধিকার, র্যাব-কোন কিছুই বাদ নাই। এইবার আসল মাজেজা বুঝলাম। এটা কি প্রমান করেনা ডঃ ইউনুস সরকার বিরোধী, দেশ বিরোধী চক্রের সাথে যুক্ত? বাংলাদেশের অগ্রগতিকে প্রশংসা করে বিশ্ব মিডিয়াতে অনেক সংবাদ আছে,তা কেন ওখানে স্থান পায়নি ?
বিবৃতিতে আছে,ওনাকে নাকি নাজেহাল করা হচ্ছে। কি রকম নাজেহাল তা লেখা নেই। আর ওনাকে কোনরকম নাজেহাল করা হচ্ছে, এই রকম কোন সংবাদও দেশি বিদেশি কোন পত্রিকাতেই দেখেনি? পদ্মা সেতু নিয়ে ওনার বিরোধিতার কথা দেশের বাচ্চারাও জানে,পদ্মা সেতু হয়ে যাবার পর লোকজন একটু ওনার বিরুদ্ধে বলবেই।এইটুকু সহ্য করার ক্ষমতা ওনার থাকা উচিত।
আরেকটা বিষয় হতে পারে,ওনার ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার বিষয়।এইরকম কিছু নিউজ পত্রিকাতে দেখেছিলাম।অলাভজনক এনজিও’র নামে বিদেশ থেকে ট্যাক্স ফ্রী টাকা এনে তা নিজের ব্যাক্তিগত লাভজনক ব্যবসায় খাটানোর অভিযোগ। সরকার কি এই জালিয়াতি নিয়ে টান দিয়েছেন? এই জন্যই আগে থেকেই সেফগার্ড নিয়ে রেখেছেন বিশ্বনেতাদের বিবৃতি বানিজ্য করে।
বিবৃতিতে আরও আছে, ডঃ ইউনুস নাকি গ্রামীণ ফোন থেকে মুনাফা করেননি।তাহলে দেশের মানুষের টাকাগুলো গেলো কোথায়? তিনি নরওয়ে সরকারের টেলনর কোম্পানির কাছে গ্রামীণের শেয়ার কেন মুনাফা ছাড়াই বিক্রি করলেন? কি উদ্দ্যেশ্য ছিল ? নরওয়ে সরকার নোবেল পুরষ্কারের প্রদানে মুখ্য ভুমিকা রাখে,এটা সবাই জানে। তাহলে কি মুনাফা ছাড়া গ্রামীণ ফোনের মত লাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দিয়ে তিনি শান্তিতে নোবেল নিয়েছিলেন ?
অনেকেই নোবেল পুরষ্কারের কথায় আপত্তি করতে পারেন। তাহলে আপনি আমাকে বলেন, যে ভদ্রলোক গ্রামের গরীব মানুষের একটা টাকা সুদ মাফ করেনা, উচ্চ হারে ক্ষুদ্রঋণ থেকে সুদ আদায় করে, তিনি কেন কোন মুনাফা ছাড়া গ্রামীণ ফোন বিক্রি করে দিলেন?
প্রসঙ্গত,এ দিকে ডঃ ইউনুস তার জন্য প্রকাশিত এই বিবৃতি নিয়ে এখনো কিছুই বলেননি। বলতে গেলে তিনি এ নিয়ে এখনো মুখই খোলেননি। শুধু বিশ্ব ৪০ নেতা নন মার্কিন একজন প্রভাবশালী সিনেটরও তার বিষয়ে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।