বাংলাদেশ-ভারত (Bangladesh-India) সীমান্তে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে পুশ-ইনের ঘটনা। সাম্প্রতিক এই অনিয়মিত প্রবেশকে কূটনৈতিক বিশ্লেষক ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, ভারত (India) ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক জটিল করতে চাইছে কি না, তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা জরুরি।
সীমান্ত দিয়ে ভারতে পুশ-ইন বৃদ্ধি
৮ মে থেকে শুরু করে টানা চার দিনে মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ৭৪ জন, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ৬৬ জন এবং কুড়িগ্রামের রৌমারি ও ভুরুঙ্গামারি (Roumari), ভুরুঙ্গামারি সীমান্ত দিয়ে ৩৬ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ (BSF)।
কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ
এ ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ সরকার দিল্লি হাইকমিশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছে। একইসঙ্গে প্রকাশ্যে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মত
সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে ধরনের সহযোগিতা চুক্তি রয়েছে, তা অনুযায়ী ভারতকে পুশ-ইনের বিষয়ে দায়বদ্ধ হতে হবে।”
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামীম কামাল বলেন, “ভারতের সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট এর পর থেকে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এখন পুশ-ইনের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠছে। বাংলাদেশি নাগরিক হলে ফিরিয়ে আনার নির্ধারিত প্রক্রিয়া রয়েছে। সেটা মেনেই কাজ করা উচিত।”
অনুপ্রবেশ বন্ধে সুপারিশ
বিশ্লেষকদের মতে, সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো ও কূটনৈতিক প্রতিবাদ জোরালো করাই হবে সময়োপযোগী পদক্ষেপ। সামান্য দুর্বলতা দেখালেই ভারত এ প্রবণতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার থাকার সুযোগকে ভারত হয়তো কাজে লাগাতে চাইছে। তাই এই মুহূর্তে দৃঢ় কূটনৈতিক অবস্থান ও সীমান্তে কঠোর নজরদারি অপরিহার্য।”
ব্রিগেডিয়ার (অব.) শামীম কামাল বলেন, “এখানে ছাড় দিলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে। তাই পুশ-ইন এখনই কঠোরভাবে প্রতিহত করতে হবে।”