ভাগ্য বদলের আশায় লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি শ্রমবীরেরা বিদেশে পাড়ি জমান কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকে প্রয়াত হন বিদেশের মাটিতে। যারা প্রবাসে প্রয়াত হন তাদের লাশ দেশে ফেরার বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিদেশ থেকে দেশে লা”শ আনতে অনেক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হয়। এমনকি অনেক সময় ভুলবশত: অন্য কোনো ব্যক্তির লাশ এসে পৌছা্য, এমন ধরনের ঘটনা কম ঘটলেও এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায়।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের সুত্রি হাসপাতালে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রবাসী আফসর। শুক্রবার (১০ মার্চ) সকালে তার দেহ জন্মস্থান সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় পৌঁছায়।
শনিবার (১১ মার্চ) রাতে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে একই দিনে উপজেলার পূর্বপাগলা ইউনিয়নের দামোধরতপী গ্রামে কফিন খুলে স্বজনরা অবাক হন। কফিনে থাকা লাশটি আফসরের নয়, অন্য কারো।
প্রয়াত আফসর মিয়া উপজেলার পূর্বপাগলা ইউনিয়নের দামোধরতপী গ্রামের জমসিদ আলীর বড় ছেলে।
তদন্তে জানা যায়, আফসরের কফিনে থাকা নিথর দেহটি মুন্সীগঞ্জ জেলার বাসিন্দা জালাল মিয়ার। তিনিও গ্রিসে হৃদরোগে আক্রা”ন্ত হয়ে প্রয়াত হন। মূলত কফিনে সাঁটানো স্টিকার পরিবর্তনের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।
আফসরের পরিবারের সদস্যরা জানান, আফসর ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রিসে প্রয়াত হন। তার ভাই এমরান মিয়ার তার প্রয়ানের চার দিন পর তার ভাইয়ের ম”রদেহ দেশে আনার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
আফসার মিয়ার ভাগনে তোফায়েল আহমদ কামরান বলেন, আমি শুক্রবার (১০ মার্চ) চাচার ম”রদেহ নিতে ঢাকা বিমানবন্দরে যাই। সব প্রক্রিয়া শেষ করে সেখান থেকে রওনা হয়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে গ্রামে পৌঁছাই। এরই মধ্যে তার জানাজা ঘোষণা ও লা”শ দাফনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু শনিবার সকালে কফিন খুলে দেখা যায়, সেটি মামার দেহ নয়।
তিনি আরও বলেন, শনিবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে লা”শটি মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার শিলিনপুর গ্রামের শফিক উদ্দিনের ছেলে জালাল মিয়ার।তিনিও গ্রিসে প্রয়াত হন।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, ম”/র্মা”ন্তিক এ ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসি। আমি প্রয়াত জালাল উদ্দিনের ঠিকানা খোঁজার চেষ্টা করি এবং তাদের সঙ্গে কথা বলি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার লা”শ হস্তান্তর করা হবে। দামোধরতপী গ্রামের আফসর মিয়ার দেহটি এখনো আসেনি। সমস্যা গ্রিসে। ১৩ তারিখ তার দেহটি দেশে আসার কথা রয়েছে।
এই ঘটনার পর কফিনটি সঠিক ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনাটি সামান্য ভুলের কারনে হয়েছে তবে সেটি গ্রিস থেকে করা হয়েছে। তবে এটি শোকসন্তপ্ত পরিবারের জন্য আশাব্যঞ্জক নয়। তবে প্রয়াত ব্যক্তির কফিনটি আসতে এক দিন সময় লাগতে পারে বলেও জানায় পুলিশ।