বাংলাদেশ বর্তমানে তিনটি সমস্যা সবচেয়ে বেশি প্রকট হয়ে উঠেছে, যেগুলো হলো- রিজার্ভ সংকট, মিয়ানমার থেকে আগত শরনার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়া এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে এ বছরের শেষ দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার এবং সকল রাজনৈতিক দলগুলো। এবার বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে যাতে সম্পন্ন হয়ে সে বিষয়ে বৈঠক করতেবাংলাদেশে এলেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (ইন্দো-প্যাসিফিক) অ্যান-মারি ট্রিভেলিয়ান।
সফররত অ্যান-মারি ট্রিভেলিয়ান আগামী সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারকে স্বাগত জানাই। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ড. শাহরিয়ার আলমের সভাপতিত্বে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য অংশিদারিত্ব’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান বক্তা হিসেবে ট্রেভেলিয়ান এ কথা বলেন।
যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের ফলাফলে আস্থা বাড়াতে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রস্তাব দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে সাহায্য করতে পারে। তিনি বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী কর্মসূচি হবে সংসদীয় গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সাংবিধানিক মূল্যবোধের প্রতি দেশের অঙ্গীকার প্রদর্শনের ভিত্তি।
এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সফররত ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ। বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “আমি তাকে (ট্রিভেলিয়ান) বলেছি যে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য ও অবাধ নির্বাচন চাই। আমরা এই ধরনের নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি।’
মোমেন বলেন, ‘আমি ব্রিটিশ মন্ত্রীকে অবহিত করেছি যে, সরকার একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে, যেটি সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং যেকোনো নির্বাচন পরিচালনার জন্য অবাধে কাজ করার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈঠকে তারা মূলত মিয়ানমার থেকে আগত শরনার্থীদের সমস্যার বর্তমান পরিস্থিতির বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী সংকট সমাধানে ব্রিটিশ সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যের ইয়াঙ্গুনে অবস্থানরত বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রদূতসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সফরের আয়োজন করেছে, এটা করা হয়েছে যাতে প্রতিবেশী দেশটি মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা শরনার্থী প্রত্যাবাসনে কী ব্যবস্থা নিয়েছে সেটা দেখাতে। মোমেন বলেন, আসুন ভালো খবরের আশা করি (মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা শরনার্থী প্রত্যাবাসন)।
নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাণিজ্য ও মিয়ানমার থেকে আগত শরনার্থী সংকট নিয়ে আলোচনা করতে শুক্রবার ঢাকায় আসেন ট্রেভেলিয়ান।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে বাংলাদেশ এখনও তার উন্নয়নের পথ ধরে রেখেছে এবং এই সফরের লক্ষ্য দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক জোরদার করা যা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী বছর সহ আগামী বছরগুলোতে সব ধরনের কূটনৈতিক বিষয় পরিচালিত হবে।