সাম্প্রতিক সময়ে গুলশানের একটি অভিজাত কাচ্চি-বিরিয়ানি বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বিরিয়ানি কিংবা অন্য খাবারে খাসির পরিবর্তে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহার করার। এই অভিযোগের পর সুলতান’স ডাইন নামের এই প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান পরিচালনা করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর একটি চৌকোষ দল। তদন্ত পরিচালনার পর সুখবর পেল অভিযুক্ত সুলতান’স ডাইণ।
কাচ্চি-বিরিয়ানি বিক্রয়কারী সুলতানস ডাইনকে খাসির পরিবর্তে অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহারের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। সোমবার (১৩ মার্চ) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ মার্চ অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইন-এর গুলশান-২ শাখায় সরেজমিনে প্রায় সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত তদন্ত্ চালানো হয়। আজ ১৩ মার্চ ওই শাখার জিএম, এজিএম ও ব্যবস্থাপক শুনানিতে অংশ নেন এবং অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য দেন। ঘটনাস্থলে তদন্ত এবং অভিযুক্তদের মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য পর্যালোচনা করে নিম্নলিখিত তথ্য পাওয়া যায়।
১) অভিযুক্ত মা-বাবার দোয়া গোস্ত বিতান, কাপ্তান বাজার নামক ভেন্ডরের মাধ্যমে খাসির মাংস সংগ্রহ করে।
২) কাপ্তান বাজারে খাসি জবাইয়ের সময় অভিযুক্ত সংগঠনের প্রতিনিধিরা মাঝে মাঝে উপস্থিত থাকেন।
৩) মাংস বিক্রেতার নিজস্ব দায়িত্বে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে পৌঁছায়।
৪) ৯ মার্চ, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মৌখিকভাবে ১৫০ কেজি খাসির মাংস সংগ্রহের কথা জানান। তবে ১২৫ কেজি সরবরাহের কথা জানান বিক্রেতা।
৫) সন্দেহযুক্ত চিকন হাড়ের ব্যাপারে অভিযুক্তরা বলেছেন যে তারা ৭ থেকে ৯ কেজি খাসির মাংস ব্যবহার করেন এবং আকারে ছোট হওয়ায় এসব খাসির হাড় চিকন হয়।
৬) যে মোবাইল নম্বর থেকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কাছে অভিযোগ করা হয়েছিল সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনের শেষে খাসি ব্যতীত অন্য প্রাণীর মাংস ব্যবহার সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে।
এর আগে সোমবার বিকেলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, সুলতান’স ডাইন নিয়ে আমরা কোনো মতামত দিতে পারি না। কারণ আমাদের কাছে কোনো নমুনা নেই এবং পরীক্ষা করানোর কোনো সুযোগও নেই। এটি ফুড সেফটি অথরিটি দ্বারা পরীক্ষা করাবে। তাদের সাথে কথা বললে জানতে পারবেন।
তিনি বলেন, আমরা অভিযান চালিয়ে ওইদিন আইন অনুযায়ী কোনো ব্যত্যয় পাইনি। আমরা অনেক রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে অনেক আইনের ব্যত্যয় পাই। কিন্তু সেদিন আমরা কিছুই পাইনি।
এসময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সুলতান ডাইনের বিরুদ্ধে যে ব্যক্তি যে মোবাইল থেকে ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তার ফোনটি বন্ধ রয়েছে। এই খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেটি ভাইরাল হতে শুরু করে। তবে অবশেষে সকল ধরনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেল সুলতান’স ডাইন।