গতকাল রোববার (১২ মার্চ) মধ্যরাত ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয় ঢাকাগামী একটি মাইক্রোবাস। এতে একই পরিবারের দুইজনসহ মোট ৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশালের রাঙ্গামাটি এলাকায়। এদিকে প্রিয়জনদের হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্বজনরা।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৭ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডের মেঝেতে শুয়ে বসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রেজিয়া বেগমের স্বামী তোতা মিয়া বলেন, যাচ্ছিলাম মেয়ের বাসায় পিঠা নিয়ে। এখন স্ত্রী আর বোনের লাশ নিয়ে বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে।’ একই দুর্ঘটনায় নিহত হন তার বোন দুলেনা বেগম।
পাশে বসে মায়ের জন্য কাঁদছিলেন তাদের মেয়ে শিখা আক্তার। বলছিলেন, মায়ের হাতের পিঠা আর খাওয়া হলো না। শেষ কথাটা হলো না। মা আর ফুপু এভাবে চলে যাবে ভাবতে পারিনি।’
শিখা বলল, “মা বাড়ি থেকে আমার বাড়িতে আসবে বলে কয়েকদিন ধরে চাল ভেঙে পিঠা তৈরি করছে।” ফুপুরে সাথে নিয়ে কয়েক রকমের পিঠা বানিয়ে আমার বাসায় আসার জন্য। মা-ফুপুর হাতের পিঠা আর খাওয়া হলো না।’।
শিখা বলেন, ‘আমি ও আমার স্বামী গার্মেন্টসে কাজ করি। ঢাকার শাহাদাতপুরে বাসা ভাড়া করি। আমার ছেলে ইয়াসিন বাবা-মায়ের সাথে থাকে। রোববার রাত ১০টার দিকে ইয়াসিনের বাবা-মা ও ফুপ্পুসহ আরও কয়েকজন একটি মাইক্রোবাসে করে রওনা হন। বেলা ২টার দিকে খবর পাই মাইক্রোবাসটি খাদে পড়ে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে মা ও বাবা মারা গেছে। এ সময় আমার ছেলে ও বাবা আহত হন।
রেজিয়ার স্বামী তোতা মিয়া বলেন, আমি আমার স্ত্রী রেজিয়া, ছোট বোন দুলেনা বেগম ও নাতি ইয়াসিনকে নিয়ে ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার মুন্সিরহাট থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে রাত ১০টার দিকে ঢাকায় মেয়ের বাসায় যাই। ত্রিশাল পার হওয়ার পর একটি যাত্রীবাহী বাস ওভারটেক করি। এ সময় মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়।পরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আমার স্ত্রী ও ছোট বোন দুলেনাসহ চারজন মারা যায়।আমাদের মধ্যে অনেকেই আগুনে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। .
এদিকে জানা গেছে, ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে রওয়না হওয়ার মাঝ পথে মাইক্রোবাস খাদে পড়ে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ৪ জন মারা যান। এবং আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো ৭ জন।