সৌদি যুবরাজকে ট্রাম্পের প্রশ্ন: ‘তুমি কি রাতে আদৌ ঘুমাও?’

যুক্তরাষ্ট্রের (United States) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে (Mohammed bin Salman – MBS) উদ্দেশ্য করে ব্যতিক্রমধর্মী এক প্রশ্ন করেন— “তুমি কি রাতে আদৌ ঘুমাও?” বুধবার সৌদি আরবের রিয়াদে আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

যুবরাজের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা

ট্রাম্প বলেন, “মোহাম্মদ, তুমি কি রাতে ঘুমাও? কীভাবে ঘুমাতে পারো তুমি?”—এই প্রশ্নের মাধ্যমে তিনি যুবরাজের নিরলস পরিশ্রমের প্রশংসা করেন। তিনি আরও বলেন, “যারা রাতে চিন্তায় ঘুমাতে পারে না, তারাই দেশকে প্রতিশ্রুত ভূমিতে পৌঁছে দিতে পারে।”

সৌদির উত্থান নিয়ে ট্রাম্প

৭৮ বছর বয়সী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “সমালোচকেরা ভেবেছিল সৌদির উত্থান সম্ভব নয়। কিন্তু গত আট বছরে সৌদি আরব তাদের ভুল প্রমাণ করেছে।” যুবরাজকে “ভীষণভাবে পছন্দ করি” বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ট্রাম্পের বক্তব্যে যুবরাজ হাসেন এবং উপস্থিত দর্শকরা দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে তাকে সম্মান জানান।

এমবিএসের অনুরোধে সিদ্ধান্ত

ট্রাম্প জানান, এমবিএস ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান (Recep Tayyip Erdoğan)–এর অনুরোধে তিনি সিরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রসিকতার সুরে তিনি বলেন, “আহ, যুবরাজের জন্য আমি কত কিছুই না করি!”

বড় অঙ্কের বিনিয়োগ চুক্তি

ট্রাম্প সম্মেলনে উল্লেখ করেন, ১৪২ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতে আরও ৬০০ বিলিয়ন ডলারের সৌদি বিনিয়োগ প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

মানবাধিকার ইস্যু এড়িয়ে গেছেন ট্রাম্প

যদিও ট্রাম্প সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্বের প্রশংসা করেছেন, তবে তিনি সৌদির মানবাধিকার পরিস্থিতি (Human Rights) এবং জামাল খাশোগি (Jamal Khashoggi) হত্যাকাণ্ড বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

বিশ্লেষকদের মত

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প ও এমবিএসের সম্পর্ক মূলত অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। যেখানে ট্রাম্প চান যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সাফল্য ও মধ্যপ্রাচ্যে পুনঃউত্থান, সেখানে যুবরাজ খুঁজছেন প্রযুক্তি, সামরিক সহায়তা ও আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তার। তবে মানবাধিকার উপেক্ষার কারণে এই ঘনিষ্ঠতা নিয়ে মার্কিন আইনপ্রণেতা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো তীব্র সমালোচনা করেছে।