সম্প্ৰতি দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব ড. ইউনুসকে নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ হয়েছে আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমে। আর সেই থেকে এই ঘটনায় ছড়িয়ে পড়েছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। অনেকেই এ নিয়ে বলেছেন অনেক কথা। এ দিকে এবার এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ৪০ বিশ্বনেতার দেওয়া খোলাচিঠি নিয়ে কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন । তিনি বলেছেন, ‘দেশে কতগুলো আইন আছে। সে অনুযায়ী সব চলে। কেউ আইন ভঙ্গ করলে শ্রম আদালত সেটা দেখেন। এ ক্ষেত্রে সরকারপ্রধান হিসেবে আমার তো কিছু করার নেই। কাজেই এখানে আমাকেই বা কেন বলা হলো? তাও বিদেশি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে কেন?’
কাতার সফর নিয়ে সোমবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সেখানে ইউএনবি সেক্রেটারি ফরিদ হোসেনকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি যখন কাতারে ছিলেন তখন ৪০ জন বিদেশি নাগরিক বিবৃতি বা আবেদন করেছিলেন, আপনি পেয়েছেন কি পাননি তা জানতে চাই। এটি ওয়াশিংটন পোস্টে একটি বিজ্ঞাপন হিসেবেও প্রকাশিত হয়েছিল। এই বিবৃতিতে আপনার মন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করছি।’
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি ভুল করছেন, এটা ঠিক বিবৃতি নয়। এটি একটি বিজ্ঞাপন। ৪০ জনের নাম ব্যবহার করা হয়েছে, এটা আমাদের বিশেষ একজনের জন্য। আমি এর কি উত্তর দিবো তা আমি জানি না, কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন আছে, সেটা হল, যিনি এত বিখ্যাত নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, এই ৪০ জনের নাম ব্যবহার করে তিনি খয়রাত করে কেন বিজ্ঞাপন দিলেন? তাও বিদেশী পত্রিকায়। কেন বিজ্ঞাপন দিতে হবে?’
দেশে কয়টি আইন আছে, সবই হবে এবং চলবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমাদের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। আমরা শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করি। যারা সঠিকভাবে কর দেন, তাদের জন্য একটি আলাদা বিভাগ আছে, যারা কর আদায় করে। কেউ যদি এই সব বিষয়ে কোনো আইন ভঙ্গ করে বা শ্রমিকদের কোনো অধিকার হরণ করে, তাহলে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করি। এটি দেখার জন্য একটি শ্রম আদালত আছে।
‘এ ক্ষেত্রে আমার তো কিছু করার নেই সরকারপ্রধান হিসেবে। কাজেই এখানে আমাকেই বা কেন বলা হলো? এর বাইরে আমি আর কী বলব? পদ্মা সেতু কিন্তু করে ফেলেছি। খালি এটুকু সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিলাম,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
৭ মার্চ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে রাজনীতি, কূটনীতি, ব্যবসা, শিল্প ও শিক্ষা ক্ষেত্রের ৪০ জন বিশ্বনেতা একটি খোলা চিঠি পাঠান। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টে পূর্ণ পৃষ্ঠার বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রকাশিত হয়েছিল। চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন, প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে টেডের মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের নাম ছিল।
প্রসঙ্গত,এ দিকে এ বিষয় নিয়ে এখনো কোনো ধরণের বক্তব্য দেননি ইউনুস নিজেও। তবে তার এই বিষয়টি নিয়ে যে নানা ধরনের ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে কোনো ধরণের সন্দেহ নেই।