বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (Bangladesh Jamaat-e-Islami) দলের আইনজীবী মোহাম্মাদ শিশির মনির (Mohammad Shishir Monir) জানিয়েছেন, ১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামী দল শুরু থেকেই দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে রাজনীতি করে আসছে—যা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট (Bangladesh Supreme Court) প্রতিষ্ঠারও আগের ঘটনা।
বুধবার (১৪ মে) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
“দাঁড়িপাল্লা আমাদের প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই প্রতীক”
শিশির মনির বলেন, জামায়াতের দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ১৯৪১ সাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আর সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা হয়েছে ১৯৭২ সালে। কাজেই প্রতীকের স্বত্ব নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, “এখন নির্বাচন কমিশন ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বরের সুপ্রিম কোর্টের একটি রেজ্যুলেশনের ভিত্তিতে আমাদের প্রতীক বাতিল করেছে।”
“জামায়াত গণতান্ত্রিক রাজনীতির অংশ”
তিনি দাবি করেন, “জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের অন্যতম বড় দল। দেশের ইতিহাসে অনুষ্ঠিত সঠিক ও স্বচ্ছ নির্বাচনে এই দল জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে, মন্ত্রীপর্যায়েও দায়িত্ব পালন করেছে। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হলো—এই দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।”
“বিচার বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে”
শিশির মনির বলেন, “বাংলাদেশ হাইকোর্ট মেজরিটি রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে। আমরা সে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করি এবং আজ শুনানি শেষে আদালত আগামী ১ জুন রায়ের দিন নির্ধারণ করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আদালতে তুলে ধরেছি যে, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল এবং কেয়ারটেকার সরকার বাতিল—এই দুটি বিষয়ে বিচার বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে একটি দলকে সাংবিধানিকভাবে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
“আদালত রাজনৈতিক প্রতীক বরাদ্দ দিতে পারে না”
তিনি বলেন, “আমরা আদালতের কাছে বলেছি—প্রতীক বরাদ্দের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের, সুপ্রিম কোর্ট নয়। এ বিষয়ে আদালতের একটি পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।”
“নিবন্ধন ফিরে পেলে নতুন উদ্দ্যমে রাজনীতিতে ফিরবে জামায়াত”
শিশির মনির আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আদালত আমাদের যুক্তিগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেছে। আশা করি, আগামী ১ জুন আদালত জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করবে। তখন দলটি আবারও জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নতুন উদ্দ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”