Wednesday , March 22 2023
Breaking News
Home / Countrywide / আজ থেকে রাজনীতি ছাইড়া দিলাম, মারসেন আরও মাইরেন, আমি অফিসে আমু, মনের মতো মাইরা দিয়েন: গোলাম মাওলা

আজ থেকে রাজনীতি ছাইড়া দিলাম, মারসেন আরও মাইরেন, আমি অফিসে আমু, মনের মতো মাইরা দিয়েন: গোলাম মাওলা

ঢাকা উত্তর সিটির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মফিজুর রহমানের সাথে গোলাম মাওলা নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় হয়। একপর্যয়ে সেই বাকবিতন্ডা হাতাহাতিতে রুপ নেয়। পরিস্থিতি অনেক ঘোলাটে হয়ে গেলে দ্রুত ঘটনা স্থল ত্যাগ করেন কাউন্সিলর মফিজুর রহমান।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মফিজুর রহমান একটি ভ্যান সার্ভিস কোম্পানির মালিককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি, চারবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর। তোর মতো চোর, আমাকে নিয়ে মন্তব্য করার সাহস কিভাবে হয়? সঙ্গে সঙ্গে লোকটি উত্তর দিল, আমি তো টোকাই আর আমানে কি খুব ভালো মানুষ? রোববার দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনের ১০ তলায় এ ঘটনা ঘটে।

সংবাদমাধ্যমের সামনে গোলাম মাওলা নামের ওই ব্যক্তির সঙ্গে কাউন্সিলর মফিজুল ইসলামের বাকবিতণ্ডা হয়। গোলাম মাওলার দাবি, তিনি ১৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি। তার প্রতিষ্ঠান মুক্তিবীণা এন্টারপ্রাইজ দীর্ঘদিন ধরে বনানী এলাকায় গৃহস্থালির বর্জ্য সংগ্রহ করে আসছে।

এ ঘটনার আগে গোলাম মাওলা গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, সিটি করপোরেশন এলাকায় বর্জ্য সংগ্রহের কাজের দরপত্র জমা দিতে হলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছ থেকে সনদ নিতে হবে। তবে কাউন্সিলর মফিজুর রহমান তাকে তা দেননি। এ বিষয়ে মফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিছুক্ষণ পর নগর ভবনের দশম তলার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে গোলাম মাওলাকে খুঁজে বের করে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলেন তিনি।

মিডিয়ার সামনে কাউন্সিলরকে গোলাম মাওলা বলেন, আপনারা আমাকে ৩০ বছর রাজনীতিতে রাখবেন। জবাবে কাউন্সিলর বলেন, চুপ কর, তুমি একজন কর্মচারী। কাউন্সিলরের পাশে থাকা সহযোগীরাও মাওলাকে চুপ থাকতে বলেন।

পরে গোলাম মাওলা বলেন, তিনি দরপত্র জমা দিতে পারেননি। কারণ কাউন্সিলর মফিজুর তাকে সনদ দেননি। শনিবার সনদ নিতে পাঠানো হয়। কাউন্সিলর বলেন, তিনি স্বাক্ষর করবেন না। এ সময় কাউন্সিলর মফিজুর বলেন, তাকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি আমার কাছে আসছেন নাকি? জবাবে গোলাম মাওলা বলেন, তিনি সুমন নামে একজনকে পাঠিয়েছেন। কাউন্সিলর মফিজুল হাত তুলে বললেন, এম মাইর দিমু। এমনকি তিনি আমার অফিসের আঙিনায়ও যাননি।

কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘দুটি ছেলে (মামুন ও সুমন নামে) আসছে, গত শুক্রবার জুমার নামাজের আগে। আমি বলছি, আজ আমার অফিসে কেউ নেই, কর্মচারী নেই। আর এতক্ষন ধরে তোকে ডাকছি। সবার সাথে মিটিং করছি। আমি সবাইকে ডাকছি। জবাবে সবার সঙ্গে বৈঠক করলেও তাদের ডাকা হয়নি বলে মন্তব্য করেন গোলাম মাওলা।

গোলাম মাওলার বক্তৃতায় কাউন্সিলর মফিজুর আবারো উত্তেজিত হয়ে বলেন, তাই বলেছি, চোখ তুলুন হালামু। আরে ছেলে তুমি কার উপর মন্তব্য করছ?’ তারপর আবার বললেন, ‘আমি এখানে নির্বাচিত প্রতিনিধি। আজ আমার হাতে অনেক চোর আসছে। আমি 51 বছর ধরে এই ওয়ার্ডে বসবাস করছি।

মফিজুর আরও বলেন, তাদের সুবিধার জন্য আমরা একত্রিত হয়ে আমার স্বাক্ষরে ১২টি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছি। আমরা যে উদ্দেশ্যে দিয়েছি সেই লক্ষ্যে সফলতা আনতে পারিনি। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের জন্য যা করা হয়েছে, কর্মীরা তা উপভোগ করতে পারেনি। আজ মেয়র পরিবর্তন করতে চান। আমার ওয়ার্ডের দুই থানার (গুলশান ও বনানী) সভাপতি ও সেক্রেটারিকে আমরা ওই জায়গায় ডেকেছি, সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সবাইকে ডাকা সম্ভব নয়।

কাউন্সিলর বলেন, “তবে কেউ কেউ আমার কাছে যাননি। এর পরেও আমি লোকেদের মাধ্যমে জানিয়েছি। আমার কাছেও সেই প্রমাণ আছে। দু-চারজন লোক আমার কাছে এসেছে। কিন্তু এ ধরনের কথা, কর্মকাণ্ড খুবই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক।

একপর্যায়ে তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেন গোলাম মাওলা। কাউন্সিলরের সহকারীরা তাকে বললেন, মুরুব্বি মানুষ মারসে, আবার মাইনশের কথা কেন? তখন কাউন্সিলর বললেন, আরে বলবেন না আমি যদি তার মতো কুত্তা হই তাতে আমার কী আসে যায়।

পরে কাউন্সিলর মফিজু তার সহযোগীদের নিয়ে লিফটে ওঠেন। গোলাম মাওলাও লিফটে ছিলেন। লিফটের ভেতরে কাউন্সিলরকে মাওলা বলেন, আজ থেকে রাজনীতি ছেড়ে দিলাম। মারসেনও মাইরেন। অফিসে আছি, মাইরা মনের মত। একজন চার রাস্তা খাবে, কিন্তু আমাদের বিরক্ত করবেন না।

জবাবে কাউন্সিলর বলেন, আপনি (মিডিয়াকে) সাক্ষাৎকার দিলেন কেন? আপনি নোংরা কাজ করেন, গাছ চুরি করে বিক্রি করেন। বনানী থানায় কত মামলা-অভিযোগ আছে তা দেখাবো। আপনি অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তোমার মত চোর, বাটপার, আমার মত লোকের সামনে কিভাবে কথা বলতে পারে?’ এরপর লিফট নিচতলায় পৌঁছালে ঘটনা শেষ হয়।

এই ঘটনাটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর অনেক নেটিজেন তাদের মন্তব্যে লিখেছেন রাজনীতি এখন গুন্ডা , সন্ত্রাসীদের দখলে সে যে দলেরই হোক। আর সুবিধাদাবাদী শিক্ষিত সমাজ এদের চামচামি করতে করতে দেশের আইন , শৃঙ্খলা , নৈতিক মূল্যবোধ সব ধ্বংস করে ফেলছে।

About Babu

Check Also

সেই আরাভ খানের স্ত্রী কেয়াকে নিয়ে উঠে এলো ভয়ঙ্কর তথ্য, যেকারণে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সেও

দুবাইয়ের আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে নিয়ে সম্প্রতি গত বেশ কিছুদিন ধরেই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *