সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংক ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা লুট হয়ে যায়। আর এই বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে শুরু হয় নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। তবে শেষ পর্যন্ত টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গেলেও এখনো কাটেনি ধোঁয়াশা। এ দিকে এবার এ নিয়ে জানা গেলো গুরুত্বপূর্ণ খবর। আকাশ ও সোহেল নামের দুজনের পরিকল্পনায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সোয়া ১১ কোটি টাকা লুট হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি ডিবির প্রধান হারুন অর রশিদ এ এসব তথ্য জানান।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আকাশকে খুলনা থেকে গ্রেপ্তার করা হলেও সোহেল পলাতক রয়েছে। তিনি গোয়েন্দাদের জালে আছেন।
ডাকাতির ঘটনায় আকাশ ছাড়াও হৃদিয়া ও মিলন নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএমপি ডিবি প্রধান বলেন, কড়াইল বউ বাজার এলাকা থেকে হাদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪৮ লাখ ৭ হাজার টাকা। তার দেয়া তথ্যে নেত্রকোনার দুর্গাপুর থেকে মিলন নামে আরেকজনকে আটক করা হয়। তার কাছে ১০ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এ দুজনের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৫৮ লাখ ৭ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, পরিকল্পনাকারী আকাশকেও ডিবি গ্রেপ্তার করেছে।
হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আকাশ ও সোহেল রানা এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। গ্রেফতার করা হয়েছে আকাশকে। সোহেল রানা আমাদের জালে আছেন।
তিনি বলেন, কেউ পরিকল্পনাকারী, কেউ মোবাইল সিম কিনেছেন, কেউ শুধু কামলা। ডাকাতির পরিকল্পনা করে আকাশ ও সোহেল। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সোহেল তার বন্ধু ইমনকে জানায়। ইমন সানোয়ারের সাথে শেয়ার করেন। সানোয়ারকে কমলা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, যার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে, যিনি বিভিন্ন ডাকাতি মামলায় কমলার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। যাদের আনা হয়েছে তাদের একজনের বিরুদ্ধে ২৭টি মামলা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা থেকে ৮ জন কমলাকে ভাড়া করা হয়। সিম ও মোবাইল ফোন আনার দায়িত্ব ছিল কমলাদের। সিম এবং মোবাইল এককালীন ব্যবহারের জন্য কেনা হয়। ওই দুই মাস্টারমাইন্ড ডাকাত দলের অন্য সদস্যদের বলে প্রশাসনের কাছে হুন্ডি থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেবে। টাকার পরিমাণ হবে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা।
হারুন অর রশিদ বলেন, ‘কমলার ১০-১৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। বলা হয়, আমরা সিসিটিভিতে দেখেছি, টাকা অন্য গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় মাইক্রোবাসে উঠতে পারেনি আকাশ। সে অন্য দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
তখন কমলাসহ অন্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সে ভাবছে আকাশ ধরা পড়েছে। তারপর তাড়াতাড়ি ৩০০ ফিট গিয়ে তাদের কাছে থাকা ব্যাগগুলো ভরে দিল। কাণ্ডগুলো নিতে পারেনি। কারণ তাদের আর কোনো গাড়ি ছিল না।’
এদিকে একজনকে গ্রেফতার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে রাখা হলেও একজননে এখনো ধরা হয়নি বলে জানা গেছে। তবে দ্বিতীয় মাস্টারমাইন্ড আকাশকে নিজেদের জালে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন ডিবি প্রধান হারুন।