সাবেক সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম (Mumtaz Begum) বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (Dhaka Metropolitan Detective Branch)–এর রিমান্ডে রয়েছেন। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে উঠে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।
অবৈধ সম্পদ ও প্রভাব বিস্তার
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় জন্ম নেওয়া মমতাজ বর্তমানে বিপুল সম্পদের মালিক। অভিযোগ রয়েছে, ৫০০ শতাংশ জমির ওপর তার রয়েছে ডুপ্লেক্স বাড়ি, রেস্টুরেন্ট, কোল্ড স্টোরেজ ও একটি স্থায়ী মেলার মঞ্চ। এছাড়াও মানিকগঞ্জ ও ঢাকায় একাধিক বাড়ি এবং দুটি হাসপাতালের মালিক তিনি। দেশের বাইরেও মমতাজের সম্পদের গুঞ্জন রয়েছে।
তিনি দীর্ঘদিন স্থানীয় বালুমহলগুলো নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। কেউ তার বিরোধিতা করলে মমতাজের অনুগত ক্যাডার বাহিনী হত্যার হুমকি বা গুম করার মতো অপরাধে জড়াতো বলে দাবি এলাকাবাসীর।
পারিবারিক জীবনে অস্থিরতা
পারিবারিক জীবনেও রয়েছে নানা বিতর্ক। সিঙ্গাইর উপজেলার চরদুর্গাপুর গ্রামে ১৯৭৪ সালে জন্ম নেওয়া মমতাজ প্রথমে বিয়ে করেন বাউল শিল্পী রশিদ সরকারকে। পরে মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র রমজান আলীকে বিয়ে করলেও সেই সংসারও টেকেনি। পরে এক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মঈন হাসান চঞ্চলকে বিয়ে করেন, কিন্তু সেই সম্পর্কও বিচ্ছেদে গড়ায়।
বিএনপি থেকে আ. লীগে, রাজনীতিতে উত্থান
রাজনীতিতে প্রথমে বিএনপি (BNP)তে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়ে পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ (Awami League)–এর রাজনীতিতে যুক্ত হন। দলের প্রধান শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তিনি। সংসদেও গান গেয়ে হাসিনার প্রশংসা ও বিরোধীদের ব্যঙ্গ করতে দেখা যেতো তাকে।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য মনোনীত হন। পরবর্তীতে আরও দুইবার নৌকা প্রতীকে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। তবে ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান।
হত্যা মামলায় আসামি
গণঅভ্যুত্থানকালীন সময়ের এক হত্যা মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ে বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন তিনি।