ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান। তিনি বাংলাদেশের সিনেমার সব থেকে বড় বিজ্ঞাপন। এখনো রাজ্ করে যাচ্ছেন দেশের সিনেমাতে একচেটিয়া ভাবে। তবে তার নাম প্রায় উঠে থাকে নানা ধরনের সমালোচনা। আর সেই ধারাবাহিকতায় এবার উঠছে আরো বড় গুরুতর অভিযোগ। জানা গেছে সুপারস্টার শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ করেছেন তার আন্ডার প্রোডাকশন সিনেমা ‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এর প্রযোজক রহমত উল্যাহার। বুধবার প্রযোজক সমিতি, পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি এবং ক্যামেরাম্যান সমিতিতে জমা দেওয়া লিখিত অভিযোগে শাকিবের বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও মিথ্যা আশ্বাসের অভিযোগও করেছেন প্রযোজক।
কিন্তু শাকিব খান কি সত্যিই ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত? নাকি তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে? সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন কিং খানের ভক্তরা।
সম্প্রতি এফডিসির ১৯টি প্রতিষ্ঠানের কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন শাকিব খান। দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি দৈনিকের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, অনেকেই কাজ ছেড়ে সমিতির সঙ্গে থাকেন। এফডিসি একটি সমিতি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। কিছু অযোগ্য লোকের কাছে সমিতি হয়ে উঠেছে সিনেমার বদলে ধ্যানজ্ঞান। তারা সারা বছরই সমিতি নির্বাচন, পিকনিক ও ইফতার পার্টি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
শাকিব খান আরও বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে এফডিসিতে সমিতির সহিংসতায় সিনেমার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। ঢালিউডের এই সুপারস্টার মনে করেন, “এসব অ্যাসোসিয়েশন না করে এফডিসি থেকে সার্ভার সিস্টেমে সিনেমা দেখানো জরুরি ছিল।” এফডিসিতে পোস্ট প্রোডাকশন কাজের ব্যবস্থা করা। কিন্তু সবাই সমিতি নিয়ে ব্যস্ত। সিনেমা দেখতে বারোটা বেজে গেছে।
কিং খানের মন্তব্যের দুদিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ, মিথ্যা আশ্বাস ও ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। তাই সমিতি নিয়ে শাকিব খানের মন্তব্য এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। সাকিব-ভক্তরা মনে করেন, তাদের প্রিয় তারকার বিরুদ্ধে ধর্ষণের গুরুতর অভিযোগ উঠত না যদি তিনি মেলামেশা নিয়ে মুখ না খুলতেন।
যদিও কিং খানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ নতুন নয়। গত বছরের ২ অক্টোবর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশি সাংবাদিক মিলি সুলতানা ফেসবুকে তার পোস্টে দাবি করেন, ‘সুপার হিরো’ ছবির শুটিং চলাকালীন হোটেল রুমে এক নারী সহ-প্রযোজককে ধর্ষণের অভিযোগে শাকিবের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায়। তাকে গ্রেফতারও করা হয়। প্রভাব প্রকাশের পর।
ওই নারী সাংবাদিক আরও লিখেছেন, শাকিবের হাতে ধর্ষণের শিকার ওই নারীকে যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তার স্বামী ছিলেন তার কর্তব্যরত চিকিৎসক। স্ত্রীর চরিত্র দেখে তাকে তালাক দেন। কিং খানের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি তাকে গোপনে বিমানের টিকিট বুক করে দেন। এরপর অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে ঝাঁপ দেন সাকিব।
এবার প্রযোজক রহমত উলিয়া তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন,”ভুক্তভোগী নিজে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন নারী। আমি সেই অপরাধমূলক অভিযোগের সাক্ষী ছিলাম। তিনি এবং তার পরিবার যে দুঃখ ও কুৎসিতের মুখোমুখি হয়েছেন তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এই ঘটনার পর সামাজিকভাবে।
প্রযোজকের দাবি, “ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে একপর্যায়ে ওই নারী ও তার পরিবারের পক্ষে বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে।” ঘটনার দিন সহকর্মীকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত থাকাকালীন শাকিব খান কাউকে কিছু না বলে নীরবে অস্ট্রেলিয়া চলে যান। পরে ২০১৮ সালে তিনি আবার অস্ট্রেলিয়া গেলে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হন। তবে সামাজিক চাপ এবং আরও নিপীড়নের ভয়ে নির্যাতিতা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় শাকিবকে ওই যাত্রায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
প্রযোজকের আরও অভিযোগ, ‘শাকিব খানকে নিয়মিত পতিতালয়ে নিয়ে যেতে হতো, কিংবা অস্ট্রেলিয়ান যৌনকর্মীদের নিয়ে আসা হতো তার হোটেলের ঘরে। এই ছিল প্রতিদিনের রুটিন। কখনো কখনো একাধিকবার। আমাদের এই যৌনকর্মীদের বিপুল পরিমাণ পারিশ্রমিক দিতে হয়েছে।
অন্য কথায়, প্রবাসী সাংবাদিক মিলি রহমান ও প্রযোজক রহমত উলিয়ার অভিযোগ থেকে যা জানা গেল তা হলো, ২০১৮ সালে যখন শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে, তখন অস্ট্রেলিয়ায় কিং খানের ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবির শুটিং চলছিল। যা এখনো শেষ হয়নি। অনেক দিন শুটিং বন্ধ রয়েছে।
যে বছর শাকিব খান অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে দেশটির পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন, সেই বছরই কিং খানের ‘সুপার হিরো’ ছবির শুটিং চলছিল। যার নায়িকা হলেন অভিনেতার দ্বিতীয় স্ত্রী শবনম ইয়াসমিন বুবলী। কিন্তু শাকিব খান কি সত্যিই ধর্ষণের মতো অপরাধ করেছেন? অভিনেতা দেশের বাইরে থাকায় মন্তব্যের জন্য তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
প্রসঙ্গত, এ দিকে বর্তমানে শাকিব খান রয়েছেন দেশের বাইরে। তার নাম সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে যে অভিযোগ তার সত্যতা এখনো যাচাই করা যায়নি এই কারণে। অনেকেই বলছেন এই ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে। আবার অনেকেই মানতে নারাজ এ ধরনের কাজ করেননি শাকিব খান।