ডা. জোবাইদা রহমান (Zobaida Rahman)-কে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজা দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবীরা। বুধবার হাইকোর্ট (High Court) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে জামিন দেন এবং তার সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।
জামিন এবং আপিল গ্রহণ
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান (Md. Khasruzzaman)-এর একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এরপর আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জোবাইদা রহমানের আইনজীবী এস এম শাহজাহান (SM Shahjahan) এবং এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন (AM Mahbub Uddin Khokon)।
এস এম শাহজাহান বলেন, “এই মামলায় আপিল করতে গিয়ে আমরা বুঝতে পারি এটি একটি সম্পূর্ণ দূরভিসন্ধিমূলক মামলা। এ মামলায় যে প্রপার্টি দেখানো হয়েছে তা বৈধ, রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্যই এই সাজা দেওয়া হয়েছে।”
তিনি জানান, আপিল দায়ের করতে গিয়ে ৫৮৭ দিনের বিলম্ব হয়েছিল, যা হাইকোর্ট মার্জনা করে। পরে আপিল তালিকাভুক্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আজ শুনানি শেষে আপিল গ্রহণ করে জামিন মঞ্জুর করা হয়।
‘একটি শব্দও প্রমাণ করতে পারেনি দুদক’
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, “দুদক (ACC) কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। এমনকি সাক্ষীরাও জোবাইদা রহমান বা তারেক রহমান অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন—এমন কিছু বলেননি।”
তিনি আরও বলেন, “জিয়া পরিবার (Zia Family)-কে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যেই এই মামলা ও সাজা।”
মামলার পটভূমি
২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় (Kafrul Police Station) তারেক রহমান, জোবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের ২ আগস্ট এই মামলায় ঢাকা মহানগর (Dhaka Metropolitan) জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আছাদুজ্জামান (Asaduzzaman) রায় দেন। রায়ে তারেক রহমানকে দুটি ধারায় মোট ৯ বছরের এবং জোবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ (Security Services Division) জোবাইদা রহমানের সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফেরা
২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের লন্ডনে (London) চলে যান তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমান। এরপর প্রায় ১৭ বছর পর ২০২৫ সালের ৬ মে দেশে ফেরেন তিনি, তার মাতা খালেদা জিয়ার (Khaleda Zia) সঙ্গে।
দেশে ফিরে আপিল ও জামিনের আবেদন করেন জোবাইদা রহমান। বিলম্ব মার্জনার আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর তার আপিল আদালতে গৃহীত হয় এবং আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে জামিনে মুক্ত রাখা হয়।