ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের অন্যতম আলোচিত একটি নাম। তিনি দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী একজন ব্যক্তিত্ব। বলতে গেলে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা পাওয়া একজন ব্যক্তি হলেন তিনি। তবে সম্প্রতি সময়ে তার নাম উঠছে নানা ধরনের সমালোচনা। আর সেই সাথে তিনি বার বার পারছেন সরকারের থেকে তিরস্কার। এ নিয়ে এবার একটি বিশেষ লেখনী লিখেছেন মাহবুব মোর্শেদ।পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বয়স এখন ৮২ বছর। বিদেশের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে তার অংশগ্রহণের যে খবরগুলো পাই তাতে তাকে বেশ ফিট মনে হয়। সিম্পল জীবনযাপনে অভ্যস্ত ড. ইউনূস এই বয়সেও অনেক সুস্থ আছেন। এটা আমাদের জন্য ভালো খবর।
সম্প্রতি বিদেশের ৪০ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ডক্টর ইউনূসের প্রতি সরকারের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। এই ব্যক্তিরা নানা বড় বড় পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন ও আছেন। এদের বেশিরভাগই ডক্টর ইউনূসের ব্যক্তিগত বন্ধু। আমার মনে হয় না কোনো গভীর ষড়যন্ত্র বা সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য থেকে তারা বিবৃতিটি দিয়েছেন। ৮২ বছর বয়সে ডক্টর ইউনূস বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন, এমনও আমার মনে হয় না। তিনি ক্ষমতায় বসতে চাইলে ২০০৭ সালেই বসতে পারতেন। সেটি তিনি করেননি। আমার মনে হয়েছে, যে আন্তর্জাতিক সুনাম তিনি অর্জন করেছেন অনির্বাচিত উপায়ে ক্ষমতায় বসে তা নষ্ট করতে চান না।
তাহলে ৪০ বিশিষ্ট ব্যক্তি কেন বিবৃতি দিলেন? আমার মনে হয়, শেষ বয়সটা ডক্টর ইউনূস নির্বিবাদে দেশে কাটাতে চান। সে কারণেই তার বন্ধুরা এমন একটি বিবৃতি দিল। এ বিষয়ে দেশের ভেতর থেকেও কথা ওঠা দরকার। ডক্টর ইউনূস যেন কোনো হয়রানি ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে দেশে থাকতে পারেন সে ব্যবস্থা করা দরকার।
আর সামনে নির্বাচন যদি সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক হয় তবে বিজয়ী দলের উচিত ডক্টর ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি বা সমমর্যাদার কোনো পদের প্রস্তাব দেওয়া। এতে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। বৃদ্ধ বয়সেও তিনি অবদান রাখতে পারবেন। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকারের রাষ্ট্রপতি হওয়া তার জন্য গৌরবজনক হবে।
তবে সবার আগে একটি ভালো নির্বাচনের জন্য ডক্টর ইউনূসের সক্রিয় সমর্থন দরকার। শুধু ৪০ কেন, বিদেশে তার হাজার হাজার বন্ধু আছে। তারা সম্মিলিতভাবে চাইলে বাংলাদেশে একটি ভালো নির্বাচনের ব্যবস্থা হতে পারে। ডক্টর ইউনূসের জন্য শুভকামনা। তাকে আমরা বাংলাদেশে বেশি সময় ধরে চাই, তার কথা মন দিয়ে শুনতে চাই।
প্রসঙ্গত,ড.ইউনুসকে সম্প্রতি বেশি আলোচনা শুরু হয়েছে তাকে নিয়ে দেয়া আন্তর্জাতিক ৪০ নেতার একটি বিবৃতি। সেই বিবৃতিতে উল্লেখ ছিল তাকে নানাভাবে হেনস্থা করছে দেশের সরকার। আর সেই মনোভাব থেকে সরকারকে বেরিয়ে আসার আহ্বানও ছিল ওই বিবৃতিতে। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়েই শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সরকার দলের লোকেরা এটিকে একটি প্রোপাগান্ডা আর বিজ্ঞাপন বলে দাবি করেছেন।