Saturday , April 1 2023
Breaking News
Home / Countrywide / ”ছেলেকে বুকে জড়িয়ে রেখে আল্লাহকে ডাকছিলাম, মুহূর্তের সব ঘটে গেল”

”ছেলেকে বুকে জড়িয়ে রেখে আল্লাহকে ডাকছিলাম, মুহূর্তের সব ঘটে গেল”

মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলাধীন কুতুবপুর নামক এলাকায় খুলনা থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি যাত্রীবাহী বাস রাস্তা থেকে উড়ে গিয়ে একটি খাদে পড়ার পর অনেক যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রয়াতের সংখ্যা বেড়ে ২০ জনে দাঁড়িয়েছে। দূর্ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন তাদের আশে পাশের বিভিন্ন হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়, যাদের সংখ্যা অন্তত ৩০। আজ রবিবার সকালের দিকে পদ্মাসেতুর এ্যাপ্রোচ সড়কের পাঁচচর নামক এলাকায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাসটি।

দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আনোয়ারা বেগম (২৫) বলেন, ‘হঠাৎ কি যে হলো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মনে হলো মাথায় আসমান ভেঙে পরতাছে। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে আল্লাহকে ডাকছিলাম। মুহূর্তের মধ্যে সব ঘটে গেল’।

কাঁপা কাঁপা গলায় তিনি এভাবে দুর্ঘটনার বর্ণনা দেন। পদ্মা সেতু এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনাকবলিত ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের যাত্রী ছিলেন আনোয়ারা বেগম।

আনোয়ারা বেগম ও তার ছোট্ট ছেলে সাজ্জাদকে উদ্ধারকর্মীরা অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর অনেকটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন আনোয়ারা। কিছুক্ষণ পর ঘটনার ভ’য়া”বহতা দেখে হতবাক হয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরেন তিনি।

তিনি বারবার আল্লাহকে ডাকছেন আর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছেন। ঘোর কাটলে নিজের পরিচয় দেন আনোয়ারা। তিনি জানান, বাগেরহাটের মোল্লারহাট থেকে বাসে ওঠেন। ওই এলাকার গারফা গ্রামের তাহিম মোল্লার স্ত্রী তিনি।

আলাপচারিতায় তিনি বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়িটি খুব দ্রুত গতিতে চলছিল। কিছু সময় পরেই পদ্মসেতু। এমনই আলোচনা করছিলেন যাত্রীরা। হঠাৎ করেই গাড়িটি রাস্তা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছিল। তখন আমি শুধু আমার সন্তানকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলাম।

আনোয়ারা বেগম বলেন, সকাল ৬টায় বাগেরহাটের মোল্লার হাট থেকে গাড়িতে উঠি। ঢাকার ধানমন্ডিতে বড় বোনের বাসায় যাচ্ছিলাম। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার মুহূর্তে মনে হয় জ্ঞান ছিল না। গাড়ি থেকে কে বা কারা বের করে আনছে তা মনে নাই! এটা এখনও স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে’।

এদিকে খবর পেয়ে আনোয়ারার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছিলেন। তিনি জানান, এখন তিনি ঢাকায় বোনের বাসায় যাবেন না, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যাবেন।

আনোয়ারা বেগমের ছেলে সাজ্জাদের কাছে জানতে চাইলে সে বলে, আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। আমি আমার মায়ের কোলে ছিলাম। দুর্ঘটনার পর হাইওয়ে পুলিশ, শিবচর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের দল উদ্ধার কাজ শুরু করে।

তবে এই দূর্ঘটনার কারন হিসেবে অনেকে জানিয়েছেন বাসটি বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন চালক। এক সময় তিনি বাসটির নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেন। তবে হঠাৎ করে চালক কেন নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেন সে বিষয়ে যাত্রীদের কেউ কেউ তেমন কিছু জানাতে পারেননি।

About bisso Jit

Check Also

একসঙ্গে উধাওয়ের পরে বাসায় ফিরে যা জানালো সেই ৪ কিশোরী

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চার কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে এবং এই ঘটনায় বেশ কৌতুহূল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *