একজন কলেজ ছাত্রর সাথে কি এমন ঘটলো যার জন্য তাকে বেছে নিতে হলো এমন একটি জীবন। ঘটনাটি সংবাদ মাধ্যমে প্রাকেশ পর অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে। একজন মানুষ কতোটা অসহায় হলে এমন একটি খারাপ কাজের সাথে লিপ্ত হতে পারে।
তমা ইসলাম (ছদ্মনাম)। রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা এই শিক্ষার্থী দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি খারাপ ব্যবসায় নিয়োজিত রয়েছেন। জীবনের নানা ধাপ পেরিয়ে আজ তাকে এই পথে নামতে হয়েছে। বাবার ব্যবসায় ক্ষতির পর, হাইস্কুলের চৌকাঠ পেরিয়ে তমার জীবনে কালো ছায়া পড়ে। তোর বাবার রাজধানী মিরপুরে কাপড়ের দোকান ছিল। কিন্তু তার বাবার ব্যবসায়িক অংশীদার তাদের সাথে প্রতারণা করে এবং তামারের পরিবারকে নিঃস্ব করে দেয়।
স্নাতক পর্যায়ে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা তালিকায় স্থান পাওয়ার পরও ভর্তির জন্য তার কাছে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। এমনকি তার বাবাও তাদের পরিবারের জন্য তেমন কিছু করতে পারেননি। পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। চার ভাই বোনের মধ্যে তামাই সবার বড়। তিনি তার পরিবারের অবস্থা এবং তার পড়াশোনার জন্য কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। তমা বিভিন্ন চাকরির ওয়েবসাইট পরিদর্শন করেছে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সিভি জমা দিয়েছে।
কিন্তু দিনের পর দিন কেটে যায় তার কোনো ফোন আসেনি। এমতাবস্থায় সদ্য উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বারপ্রান্তে আসা এই ছাত্রী খুবই নার্ভাস। মাসখানেক পর হঠাৎ একটা ফোন আসে তোমার কাছে। একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরির ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়। গুলশানের ওই অফিসে যথাসময়ে হাজির হন তমা। তারপর তমাকে কয়েকটি সহজ প্রশ্নের পরে জানানো হয় যে এটি একটি
বিউটি পার্লারের কাজ। তাদের স্পা করতে হবে না। দীর্ঘদিন ধরে চাকরি খোঁজার পরও কোনো উপায় না পেয়ে তমা তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়। সে ভেবেছিল চাকরি পেয়েছে। সেই দিন হিসাবে তমাকে পরবর্তী তারিখ সহ পাঠানো হয়। জানানো হলো, ওই অফিসের ‘বস’ পরের দিন আপনার সাক্ষাৎকার নেবেন। তিনি ফাইনালে ক্লিয়ার করলেই আপনি কাজ পাবেন। পরবর্তী তারিখে তমা
সময়মত ব্যক্তির দেওয়া ঠিকানায় পৌঁছান। পরে তাকে হোটেল রেডিসনের একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। তমা সেখানে গিয়ে দেখল সোফায় একজন বসে আছে। চাকরির পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় সে ভাবতেই পারেনি তার কী হতে যাচ্ছে! এরপর রুমে থাকা ব্যক্তিকে নিয়ে হোটেলে যান তমা।
‘বস’ কানেকানে’ তমাকে বলে তাকে সন্তুষ্ট করতে পারলে চাকরি নিশ্চিত। সবেমাত্র হাইস্কুলের চৌকাঠ পার হওয়া তমা তখনও কিছু বুঝতে পারেনি সাথে কি হতে যাচ্ছে। তারপর রুমে ওই ব্যক্তি জোর করে তাকে খারাপ কাজ করে। শুরু হয় তমার জীবনের একটি নতুন অধ্যায়। তমা তার জীবনের এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি কাউকে বললেও তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজন ছিল না, তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, তিন ছোট ভাই ও বোনের দিকে তাকিয়ে প্রতিরোধ করতে পারেননি। তমা সেদিনই বাড়ি ফিরে নিজেকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করে।
কিন্তু পরিবারের কথা ভেবে অন্ধকার জগতের পথ বেছে নেন তমা। তমা বাড়ি ফেরার এক-দুই দিন পর পুরুষরা তার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করে। বলেন, আপনি চাইলে প্রতি মাসে তিনটি কাজ পাবেন। এর জন্য আপনাকে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হবে। তমাও তাদের শর্তে রাজি হল। তমারর দাবি, তার
আর কোন উপায় ছিল না! এই গ্রুপের এডমিন কারো কাছ থেকে কোন বিনিময় নেয় না। তিনি কাজের সন্ধান দেয়। এভাবেই আমরা অন্ধকার জগতে প্রবেশ করি। একবার আমি বুঝতে পারি কিভাবে যোগাযোগ করতে হয়। কিভাবে নিজেকে আড়াল করতে হয় এই কাজটি করতে গিয়ে তিনি কখনো নিজেকে অপরাধী মনে করেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সবসময় করি, কিন্তু কখনো কখনো করি না। টাকা ও প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা আসবে তাদের অবস্থা বোঝার চেষ্ট করি। যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো তারা হয়তো একটু বেশি চাই। কীভাবে যোগাযোগ করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,
আমি গ্রুপে পোস্ট করি, যোগাযোগ ইনবক্সে থাকে। এরপর ফোনে যোগাযোগ হয়। জায়গাটি কীভাবে নির্ধারণ করা হয়? তিনি বলেন, “আমাদের গ্রুপে অনেকেই আছেন যারা পরিবার নিয়ে থাকেন। তারা সেখানে যান, কিন্তু জায়গাগুলো খুবই নিরাপদ। কেউ বিরক্ত করবে এমন কোনো সমস্যা নেই।
মেয়েটি এই কাজে বাধ্য হয়ে লিপ্ত হয়েছে। যদি সে ভালো হওয়ার সুযোগ পায়ে তাহলে সে আবার সাধারন মানুষের মত জীবন জাপন শুরু করবে বলে সেই সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন।