বিএনপি (BNP) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) বলেছেন, তৎকালীন আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের কারণে বাংলাদেশের জনগণ আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ১৬ মে ‘ফারাক্কা দিবস’ উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস ও জনগণের আন্দোলন
ফখরুল বলেন, ১৯৭৬ সালের ১৬ মে ‘ফারাক্কা দিবস’ বাংলাদেশের জাতীয় আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ৪৯ বছর আগে অবিসংবাদিত নেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর (Maulana Abdul Hamid Khan Bhashani) আহ্বানে সারাদেশ থেকে লাখো মানুষ ভারতের ফারাক্কা (Farakka) বাঁধের বিরুদ্ধে রাজশাহী থেকে পদযাত্রায় অংশ নেয়।
তিনি বলেন, ভারতের ফারাক্কা পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণ করে অভিন্ন নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহার শুরু হয়। এর ফলে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হয় এবং ঐ এলাকায় পানিসহ প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা চরম আকার ধারণ করে।
“ফারাক্কা বাঁধ এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে”
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের মতামত উপেক্ষা করে ভারতকে পরীক্ষামূলকভাবে বাঁধ চালুর অনুমতি দেয়। পরবর্তীতে এটি স্থায়ীভাবে চালু থাকায় সেটি বর্তমানে ‘মরণফাঁদে’ রূপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, “জীববৈচিত্র্য, পরিবেশগত মান এবং মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়গুলো বিবেচনায় না এনে এই সিদ্ধান্ত দেশের জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।”
“বাশানীর নেতৃত্বে প্রতিবাদ ছিল দূরদর্শিতার পরিচয়”
ফখরুল আরও বলেন, জনদুর্দশার আশঙ্কায় মজলুম জননেতা ভাসানী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক প্রতিবাদ জানান এবং বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে তোলেন। তাঁর নেতৃত্বে হওয়া মিছিল বিশ্বের নজর কাড়ে এবং ফারাক্কা ইস্যু আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত হয়।
“৫৪টি নদীতে একতরফা পানি প্রত্যাহার বাংলাদেশের জন্য হুমকি”
তিনি উল্লেখ করেন, আজও ফারাক্কা দিবসের তাৎপর্য প্রাসঙ্গিক। ভারত (India) ৫৪টি অভিন্ন নদীতে একের পর এক বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার করছে, যা বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। “বাংলাদেশ ক্রমেই নিষ্ফলা উষর ভূমিতে পরিণত হচ্ছে,” মন্তব্য করেন তিনি।
“ফারাক্কা দিবস আন্দোলনের অনুপ্রেরণা”
তিনি বলেন, “১৯৭৬ সালের ঐতিহাসিক পদযাত্রা আমাদের শিক্ষা দেয় কীভাবে ন্যায্য অধিকার আদায়ে গণজাগরণ গড়ে তুলতে হয়। ফারাক্কা দিবস আজও আমাদের সেই সংগ্রামের প্রেরণা যোগায়।”
তিনি দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন।