“নির্বাচনের নাম শুনলে সরকারের গা জ্বলে”—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি (BNP)-র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস (Mirza Abbas)। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) কুমিল্লা (Cumilla) শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সদস্য ফরম বিতরণ ও সদস্য নবায়ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের ভয়: মির্জা আব্বাস
মির্জা আব্বাস বলেন, “নির্বাচনের কথা বলাটা এখন মনে হয় পাপ। কারণ, নির্বাচন দিলে বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসবে—এটা সরকার জানে বলেই নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছে। অথচ দেশের মানুষ নির্বাচন চায়, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চায়।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে আমরা নির্বাচন আদায়ের আন্দোলন করছি। নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।”
সরকারের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও চাঁদাবাজির অভিযোগ
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ তুলে মির্জা আব্বাস বলেন, “গত ৮ মাসে ৯০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এখন বিএনপি তো ক্ষমতায় নেই, তাহলে কারা করছে এই চাঁদাবাজি? নিশ্চয়ই সরকারের লোকজন।”
তিনি বলেন, “আমরা চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি—সাহস থাকলে যারা চাঁদাবাজি করছে তাদের ধরুন। কিন্তু আপনারা জানেন, যারা সরকারে আছে তারাই এর সঙ্গে জড়িত।”
তারেক রহমানের বিষয়ে ব্যাখ্যা
বক্তব্যে তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর দেশে না ফেরার বিষয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, “অনেকে প্রশ্ন করে কেন তারেক রহমান দেশে আসেন না। আমি বলি, তিনি আসবেন—সময় মতোই আসবেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। তাই তারেক রহমানকে ভেবেচিন্তে এগোতে হবে।”
তিনি বলেন, “বিদেশে বসেই তিনি বিএনপিকে অনেক শক্তিশালী করেছেন।”
দলের ভেতরের সমস্যা ও হুঁশিয়ারি
বিএনপির মধ্যে সুবিধাভোগী, প্রতারক, চাঁদাবাজ ও দখলবাজরা ঢুকে পড়েছে—এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এদের কারণে দলের বদনাম হচ্ছে। সজাগ থাকতে হবে, এমন কেউ থাকলে তাদের আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী কেউ ছাড় পাবে না।”
মিডিয়ার স্বাধীনতা ও করিডর প্রসঙ্গ
মিডিয়ার স্বাধীনতা নিয়েও সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের আমলে যেমন মিডিয়ার স্বাধীনতা ছিল না, বর্তমান সরকারের আমলেও নেই।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা এখন হুমকির মুখে। সাজেক ও সেন্ট মার্টিন (Saint Martin) করিডর নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম ভূঁইয়া (Mohammad Selim Bhuiyan), উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজী আমিন উর রশীদ ইয়াছিন (Haji Aminur Rashid Yasin), মহানগর বিএনপির সভাপতি উৎবাতুল বারী আবু, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিমসহ বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতারা।