মাগুরা (Magura) জেলায় আট বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। শনিবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখ (Hitu Sheikh)-কে মৃত্যুদণ্ড দেন। একইসঙ্গে মামলার অপর তিন আসামি—শিশুটির বোনের জামাতা সজীব শেখ (Sajib Sheikh), সজীবের ভাই রাতুল শেখ (Ratul Sheikh) ও তাদের মা রোকেয়া বেগম (Rokeya Begum)-কে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বিচার কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
চাঞ্চল্যকর এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১৩ এপ্রিল দাখিল করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলাউদ্দিন সরদার (Alauddin Sardar)। অভিযোগ গঠন হয় ২৩ এপ্রিল এবং ২৭ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৯ জন সাক্ষ্য দেন। টানা শুনানি শেষে ১২ কার্যদিবসে বিচার কার্যক্রম শেষ হয়।
অপরাধের পটভূমি
৬ মার্চ মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী (Nijnanduali) গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে আট বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণের শিকার হয়। গুরুতর অবস্থায় তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল (Magura 250 Bed Hospital) থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (Faridpur Medical College Hospital) এবং পরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (Combined Military Hospital)-এ ভর্তি করা হয়। সেখানেই ১৩ মার্চ শিশুটি মারা যায়।
৮ মার্চ শিশুটির মা আয়েশা আক্তার (Ayesha Akhter) মাগুরা সদর থানা (Magura Sadar Thana)-য় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আসামির স্বীকারোক্তি ও বিচারকের মন্তব্য
১৫ মার্চ রিমান্ড চলাকালে হিটু শেখ মাগুরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (Magura Senior Judicial Magistrate Court)-এ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং জানায়, সে একাই এ অপরাধ করেছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, হিটু শেখের স্বীকারোক্তি, মেডিকেল প্রতিবেদন ও সাক্ষ্যপ্রমাণে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও দ্রুত বিচারের দাবি
এই ঘটনার পর মাগুরাসহ সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতি (Magura District Lawyers Association)-র সদস্যরা দ্রুত বিচারের দাবি জানান।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, ‘‘একটি নিষ্পাপ শিশুকে যেভাবে পাশবিকভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই একমাত্র বিচার।’’ আদালতের রায়ে সেই শাস্তিই নিশ্চিত হয়েছে বলে জানান তিনি।