ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতের ‘তিস্তা প্রহার’ সামরিক মহড়া: উপমহাদেশে নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত

আন্তর্জাতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) একটি বক্তব্যে বলেন, “বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে যুদ্ধ প্রস্তুতির বিকল্প নেই।” শান্তিপ্রিয় মানুষ হিসেবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে যুদ্ধ চান না, তবে পরাজয়ের কোনো অপশন না রেখে জয়কে সামনে রেখে প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তার কথা বলার পরই যেন ভারতীয় প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বক্তব্য ভারতের মধ্যে কৌশলগত উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ভারতের তিস্তা ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ (Teesta Field Firing Range)-এ ৮ থেকে ১০ মে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল সামরিক মহড়া, যার নাম ‘তিস্তা প্রহার’ (Teesta Prahar)। এতে ভারতীয় পদাতিক, কামান, সাজোয়া ইউনিট, স্পেশাল ফোর্স, সেনাবিমান ও সংকেত বাহিনী অংশ নেয়। ব্যবহৃত হয় উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র ও নতুন প্রজন্মের ড্রোনসহ সমন্বিত কমব্যাট সিস্টেম।

ভারতীয় মহড়ার তাৎপর্য

এই মহড়া শুধু একটি সামরিক অনুশীলন নয়, বরং এটি দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে এক প্রকার মনস্তাত্ত্বিক সংকেত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষক প্রিয়জিং দেব সরকার (Priyojing Deb Sarkar)। তিনি BBC-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘এই মহড়া হলো প্রতিবেশীদের উদ্দেশ্যে মনস্তাত্ত্বিক বার্তা—ভারত যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।’’

বাংলাদেশের ভূমিকা ও ভারতের উদ্বেগ

বিশ্লেষকদের মতে, মহড়াটি মূলত উপমহাদেশে ভারতের আধিপত্যের বার্তা দিলেও বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবস্থানে এটি নীরব কিন্তু জোরালো প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকারের অভ্যন্তরীণ চাপে, এবং পাকিস্তান সীমান্তে একের পর এক ব্যর্থতার পর, ড. ইউনূসের মতো প্রভাবশালী কণ্ঠ যখন যুদ্ধ প্রস্তুতির কথা বলেন, তখন দিল্লির মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

এই প্রেক্ষাপটে ঢাকার অবস্থান এখনো শান্ত ও নিরব হলেও, ভারতের মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া এবং সামরিক প্রস্তুতি দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।