আগামী অর্থবছরের ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতিতে কিছু চমক রয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ শর্ত হিসেবে ব্যালেন্স অফ পেমেন্টস এবং ম্যানুয়াল-বিপিএম ৬ অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিপিএম ৬ এর অধীনে, দেশের রিজার্ভ নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) সিস্টেমে প্রকাশ করা হবে।
তবে বর্তমান গণনা পদ্ধতিও বলবৎ থাকবে। আর একক ডলারের হার নির্ধারণের জন্য নীতিগতভাবে সমর্থন রয়েছে। এছাড়া সুদের হার নির্ধারণে বেঞ্চমার্ক পদ্ধতি এবং সুদ করিডোর পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।
এ ছাড়া মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশ এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার সাড়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণের জন্য মতামত উত্থাপন করা হয়েছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে নির্বাহী পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে মুদ্রানীতি নিয়ে আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ড. মাজবাউল হক।
সূত্র জানায়, আসন্ন মুদ্রানীতিতে আইএমএফের সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রিজার্ভের হিসাব পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন পদ্ধতিতে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের হিসাব দেখাবে।
রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল, সোনালী ব্যাংক ঋণ এবং শ্রীলঙ্কা ঋণ সহ প্রায় সাড়ে ৫ বিলিয়ন নতুন পদ্ধতির হিসাব করার সময় বাদ দেওয়া হবে।
বর্তমানে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ রয়েছে। সেখান থেকে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার সরিয়ে নিলে রিজার্ভ আসবে ২৪ বিলিয়ন।
এবং এই সংখ্যাটি আইএমএফ-এর সর্বনিম্ন সীমার (২২ দ/শমিক ৭৫ ডলার) উপরে হবে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য অতিরিক্ত উদ্বেগের কারণ হবে না।
তারা বলেছেন, নতুন মুদ্রানীতিতে ডলারের একক হার নির্ধারণ করা হবে। একটি অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক ইচ্ছামত বিভিন্ন হারে ডলার ক্রয় বিক্রয় করতে পারে না। তবে ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে আলাদা রেট থাকবে। কেনার শর্তে ডলারের দামের পার্থক্য দুই টাকার বেশি হবে না। একইভাবে, মানি চেঞ্জাররাও নির্দিষ্ট হারে ডলার বিনিময় করবে। এদিকে নতুন মুদ্রানীতিতে ৯ শতাংশ সুদের হার সীমা অপসারণ করে সুদের হার করিডোর নীতি ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বেঞ্চমার্ক পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। ব্যাংকগুলো সেই হার অনুযায়ী লেনদেন করবে। এক্ষেত্রে সুদের হার মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হবে না। আর সুদের হার নির্ধারণে নগদ অর্থ, ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদের হার গড় করে একটি হার নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মাজবাউল হক বলেন, নিজের প্রয়োজনে কিছু সংস্কারের কাজ করছি। বৈদেশিক মুদ্রার একাধিক হার একের মধ্যে আনা, সুদের হারকে বাজারমুখী করা এবং আইএমএফের বিপিএম ৬ পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু প্রচলিত গ্রস অ্যাকাউন্টও থাকবে রিজার্ভ হিসেবে।