নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা সদরের আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) হারুনুর রশিদ হারুনের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (২১ মে) মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করেন তিনি। ঘটনা জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাসহ অভিভাবকরা।
এ ঘটনায় সোমবার মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক শিক্ষক হারুনের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। শিক্ষক হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ওই মাদ্রাসার ছাত্রীদের জড়িয়ে ধরেন, ছাত্রীদের স্পর্শকাতর অংশ নিয়ে অশ্লীল কথা বলেন, ছাত্রীরা দুষ্টামি করলে ছাত্র দ্বারা ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়ানো এবং চুমু খাবার নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে ওই শিক্ষক মাদ্রাসায় এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। রোববার সম্পতি মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিভিন্নভাবে শরীর নিয়ে অশ্লীল কথা বলে যৌন হয়রানি করলে ঘটনাটি শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। এরপর ওই শিক্ষককে নিয়ে নানা সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
যৌন হয়রানির স্বীকার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী জানান, রবিবার ক্লাসে এক ছাত্রী আমাকে খুব বিরক্ত করছিল। এ সময় আমি তাকে বারবার নিষেধ করার পরও সে আমাকে বিরক্ত করা বন্ধ করেনি। তাই আমি তার এক হাত মুচরেধরি। শিক্ষক হারুন এসে আমাকে বকাঝকা করতে লাগলেন। একপর্যায়ে শিক্ষক আমার গোপনাঙ্গ নিয়ে অশ্লীলতা করেন এবং ছাত্রকে আমার ওড়নার ভেতরে হাত দিতে বলেন। পরে বিষয়টি মাদ্রাসার আয়া ও ম্যাডাকে জানাই। মাদ্রাসা থেকে বাড়ি গিয়ে পরিবারকে খবর দেন। এরপর ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে সোমবার মৌখিকভাবে মাদ্রাসা সুপারকে অবহিত করি।
ওই মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত আরেক ছাত্রী জানান, শিক্ষক হারুন বেশ কিছুদিন ধরে আমাকেসহ মাদ্রাসার অনেক ছাত্রীকে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অঙ্গ নিয়ে অশ্লীল কথা বলে, আলিঙ্গন, কৌতুক করে যৌন হয়রানি করে আসছে। এজন্য আমরা তার ক্লাস করতে খুব ভয় পাই। এখন পর্যন্ত আমরা লজ্জার কারণে কাউকে বলতে পারিনি। রবিবার যখন আমার এক সহপাঠীর সাথে ঘটনাটি ঘটে, তখন আমরা এটি সম্পর্কে মুখ খুলেছিলাম। এরপর শিক্ষকসহ অভিভাবকদের বিষয়টি জানাই। আমরা ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে মেয়েটির মা বলেন, আমার মেয়ে মাদ্রাসা থেকে বাসায় এসে আমাকে বিষয়টি জানায়। আমরা লজ্জায় কাউকে বলতে চাইনি। তবে এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে শিক্ষার্থীরা খুশি হবে। মাদ্রাসায় শিক্ষকদের এসব ঘটনা বন্ধ করতে হবে।