বহিরাগত কোনো নারী বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নারী শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের আবাসিক হলে প্রবেশের অনুমতি নেই। তবে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকরিবি) কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে বহিরাগত এক নারীকে প্রবেশ করতে দেখে শিক্ষার্থীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার (১৬ মে) রাত ১০টা ০৮ মিনিটে দুই পুরুষ এক নারীকে নিয়ে প্রবেশ করেন।
পরে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই নারীকে রুমে নিয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি এস এম সজীব হোসাইনের কক্ষে দুই ঘণ্টা অবস্থান করে রাত ১২টায় চলে যান।
এ ঘটনায় হলের নিরাপত্তারক্ষীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসিটিভি ফুটেজ থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৬ মে) রাত ১০টা ০৮ মিনিটে এক বহিরাগত মহিলা ও পাঁচ-ছয়জন ছেলে হলের ২১৯ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে। হল প্রশাসন ঘটনাটি জানতে পেরে নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্ক করার পর, দুই ঘণ্টা অবস্থানের পর দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে তারা হল থেকে বের হন।
রোববার (২১ মে) রাতে বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানাজানি হলে সজিব হোসেন ওই দিনের ঘটনা উল্লেখ করে ছবিসহ তার ফে”সবুক ওয়ালে পোস্ট করেন।
তিনি পোস্টে লিখেছেন যে, তিনি তার প্রাক্তন রুমমেটের বিয়েতে যোগ দিতে পারেননি এবং তার প্রাক্তন রুমমেট এবং তার স্ত্রীর সাথে তার ঘরে (২১৯) কেক কেটে উদযাপন করেছেন। সেখানে তার বর্তমান রুমমেটরাও ছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, প্রভোস্টের অনুমতিক্রমে এ বিষয়টি করা হয়েছে। তবে হলের প্রভোস্ট অনুমতি দিয়েছেন এই বিষয়টি অস্বীকার করেন।
ছেলেদের আবাসিক হলে মেয়ে নিয়ে ঢুকে রাত্রিযাপন করা সম্ভব কি না জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর হারুনুর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ওই হলের প্রভোস্ট বলতে পারবেন। আর ঘটনাটা আমার জানা ছিল না।
কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের কাছে মেয়েটির হলে ঢোকার ও বের হওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ আছে। আমি কীভাবে তাকে (সজিবকে) এমন কোনো অনুমতি দিতে পারি? এটা বেআইনি। ঘটনার পরদিন তাকে সতর্ক করা হয়। .
আমি জানতাম না যে সে আমার নাম ফেসবুকে পোস্ট করেছে। এদিকে এ ঘটনায় প্রধান আসামিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে নিরাপত্তারক্ষীকে নোটিশ দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আজ সোমবার (২২ মে) হল গার্ড দুজনকে শোকজ করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত সজীবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট বলেন, দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে অবহেলার অভিযোগে আমরা গার্ডদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। অভিযুক্ত সজীবকে সতর্ক করা হয়েছে। তবে পরবর্তীতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা দেখব।
সাংবাদিকরা হলের প্রভোস্টের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সজীব হোসেন বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং তার রুমমেটদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তিনি জানান, ঘটনার পর তিনি কোনো সতর্ক বার্তা পাননি।
এ ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া মেয়েদের একটি হলে প্রতি সপ্তাহে কিছু শিক্ষার্থী নিয়মিত গভীর রাতে হলে প্রবেশ করে বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। মেয়েদের হলে প্রবেশের শেষ সময় রাত ৯টা।
এ ঘটনায় জড়িত সজীব হোসেনকে গত বছর শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।